জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের সংস্কার কাজের জন্য গত বছরের জুন মাসে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। তবে বরাদ্দ পাওয়ার আট মাস পেরিয়ে গেলেও আজও শুরু হয়নি কাজ।
সরেজমিনে জবি কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে পুরো জরাজীর্ণ অবস্থা। ভাঙা চেয়ার, নষ্ট এসিসহ নিজস্ব সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। মিলনায়তনের তিনশ আসনের মধ্যে ৭০টিই ভাঙা। এর কোনোটির হাতল ভাঙা, কোনোটির হেলান দেওয়ার অংশটি ভেঙে পড়ে গেছে। আবার কোনোটির গদি ছেঁড়া। সামনের সোফাগুলোর অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও পেছনের দিকের চেয়ারগুলোর অধিকাংশই জরাজীর্ণ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৭ জুন কেন্দ্রীয় মিলনায়তন আধুনিকায়ন ও টয়লেট নির্মাণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনুকূলে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ‘সিটি কর্পোরেশনের জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনুকূলে শর্তসাপেক্ষে অবমুক্তিতে এ বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে টাকা বরাদ্দের আট মাস পেরোলেও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজটি এখনো শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অদক্ষ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সরওয়ার জাহান বলেন, “কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে বসার মতো অবস্থা এখন আর নেই। চেয়ারগুলো ভেঙে গেছে। অথচ এ সংস্কারের জন্য গত বছরেই টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের অদক্ষতার কারণে আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতার জন্য এ কাজ হচ্ছে না।“
ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রহিছ উদ্দিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে অডিটোরিয়াম আসন সমস্যা অন্যতম। ভাঙা আসনের জন্য শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হন। দিনের পর দিন পার হলেও তা মেরামতের কোনো উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেনি।“
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “মিলনায়তের সাউন্ড সিস্টেমে সমস্যা রয়েছে। নিজেদের সাউন্ড সিস্টেম নাই। প্রতিবারই বাইরে থেকে ভাড়া করে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হয়। দেয়ালের রং উঠে গেছে। সবগুলো এসি নষ্ট। স্টেজের পেছনে গিয়ে কস্টিউম পাল্টানোর মতো কোনো জায়গা নেই। বসার আসনেও সমস্যা রয়েছে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “খুব শিগগিরই সংস্কার কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হবে। সিটি করপোরেশন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে মিলনায়তনটি দেখে গেছেন। আমি নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।