• ঢাকা
  • বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

নতুন সিন্ডিকেট গঠনের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪, ০৯:৪৬ পিএম
নতুন সিন্ডিকেট গঠনের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের
শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। ছবি : প্রতিনিধি

ফ্যাসিবাদের দোসর সকল সিন্ডিকেট সদস্যের পদত্যাগ এবং পূর্বের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব ব্যক্তিদের নিয়ে নিয়মানুগ উপায়ে নতুন সিন্ডিকেট গঠনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাধারণ শিক্ষার্থী। মানববন্ধন শেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এমন কর্মসূচি পালিত হয়।

এসময় ফ্যাসিবাদের সিন্ডিকেট-মানি না মানবো না, টেন্ডারবাজের সিন্ডিকেট-ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাওসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইমরান বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে একটি মডেল ক্যাম্পাসে ও শিক্ষার্থীবান্ধব পলিসি প্রণয়নের জন্য এই সিন্ডিকেটের পরিবর্তন করা সবচেয়ে বেশি জরুরি। যারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর তাদের দিয়ে এই সিন্ডিকেট গঠন করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শিক্ষক সকল পর্যায়ে দলীয়করণ করা হয়েছে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।

উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহ্যগতভাবে গণতন্ত্র ও ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠার আদর্শ হিসেবে বিশ্ববাসীর নিকট সমাদৃত। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘সিন্ডিকেট’ ফ্যাসিবাদের দোসরদের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পুষ্ট। গত ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন হলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সে সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হলকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। ফলে ঢাবি শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতার এক উন্মত্ত অথৈ সাগরে পতিত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সিন্ডিকেট সদস্যরা বরাবরই ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত রাখার স্বার্থে একের পর এক শিক্ষার্থীদের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত দিয়ে গিয়েছে। বর্তমান সিন্ডিকেট ঢাবি হলগুলোকে শতভাগ ছাত্রলীগের আয়ত্ত্বাধীন করে দেওয়াসহ অসংখ্য অন্যায়মূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল কুশীলবের ভূমিকা পালন করেছে।

বর্তমান সিন্ডিকেট বৈধ পন্থায় গঠন করা হয়নি উল্লেখ করে বলা হয়, বেশ কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফ্যাসিবাদের দোসর পূর্বোক্ত উপাচার্য মাকসুদ কামালের ঘনিষ্ঠ আওয়ামীপন্থীদের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। সুতরাং এ সকল ব্যক্তিদের সিন্ডিকেট সদস্য থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। অনতিবিলম্বে এ সকল সদস্যদের পদত্যাগ করতে হবে।

এ ছাড়া বর্তমান সিন্ডিকেট ভেঙে শিক্ষার্থীবান্ধব নতুন সিন্ডিকেট গঠিত হওয়ার পর উক্ত সিন্ডিকেটের প্রথম বৈঠকে ছাত্র-জনতার ৯ দফার আলোকে ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে যৌক্তিক সমাধান প্রদান এবং একইসঙ্গে প্রথম বর্ষসহ সব শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করা হয়।

লিখিত আবেদন শেষে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রায়হান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, সিন্ডিকেট সদস্যরা নির্বাচনের মাধ্যমে এসেছেন। চাইলেই তাদের অপসারণ করা যায় না। এটি আইনগত দীর্ঘসূত্রতার ব্যাপার। তবে রাষ্ট্রপতি চাইলে এটা সহজেই করতে পারেন। এ ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

Link copied!