• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘প্রলয় গ্যাং’ সদস্যদের বহিষ্কার ও শাস্তি চান ঢাবি শিক্ষার্থীরা


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৩, ০৭:৪৭ পিএম
‘প্রলয় গ্যাং’ সদস্যদের বহিষ্কার ও শাস্তি চান ঢাবি শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাধ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ূনকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ সদস্যদের বিচার এবং স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৭ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞানের ব্যানারে ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষকরাও অংশ নেন।

ঢাবির অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ বি এম নাজমুস সাকিব বলেন, “আজ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিরাপদ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন জায়গায় ‘প্রলয়’ নামের এমন দুর্ধর্ষ গ্যাং সদস্যরা প্রকাশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর এমন পৈশাচিক হামলার দায় কে নেবে? আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্যদের স্থায়ী বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্যাং সংস্কৃতির কবর রচিত হবে।“

বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, “সংঘবদ্ধভাবে একজন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করা খুবই ভয়ানক বিষয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে যায় না। এর আগে এ ধরণের অপরাধের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনেক শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি দিয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখি। আশা করছি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আগামীতে এ ধরণের গ্যাং কালচার থেকে মুক্ত থাকবে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।”

ভুক্তভোগীর সহপাঠী খালিদ মাহমুদ মিরাজ বলেন, গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত অর্ধশত চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে সহ্য করতে হয় অপমান-হুমকিসহ শিকার হতে হয় নানা বুলিংয়ের।

মানববন্ধনে জোবায়েরের সহপাঠী জামিল শামস শাফী বলেন, “জোবায়েরের ওপর যেভাবে হামলা করা হয়েছে তা কোনো মানুষের কাজ হতে পারে না। আমরা চাই না এই ক্যাম্পাসে আর কোনো অপরাধী চক্র গড়ে না উঠুক, কোনো গ্যাং তৈরি না হোক। আমরা চাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে; প্রত্যেক শিক্ষার্থী যাতে ন্যায় বিচার পায়, ক্যাম্পাসে নিরাপদভাবে চলাচল করতে পারে। এই ক্যাম্পাসে আমরা চাই না প্রলয় গ্যাংয়ের মতো অপরাধী চক্রের অবাধ বিস্তার। অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।”

একই ব্যাচের জান্নাতী ঈশা বলেন, “শুধু প্রলয় গ্যাং না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরণের যত গ্যাং আছে সবকিছুর নির্মূল চাই। আমরা একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই।”

এছাড়া অপরাধ বিজ্ঞানের অপর শিক্ষার্থী জামিল হোসেন বলেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা এই গ্যাংয়ের সদস্যরা বড় ভাইদের আশ্রয়ে এমন অপরাধ জগৎ গড়ে তুলেছে। নেশার টাকার জন্য দীর্ঘদিন ধরে এরা ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা যুগল, সাধারণ মানুষ, ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে চুরি, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি করে আসছে। ক্যাম্পাসে সন্ধ্যা নামতেই ফুলার রেড, শহীদ মিনার এলাকায় সাধারণ মানুষ এবং ভাসমান দোকানি থেকে অপমান-অপদস্থ করে জোরপূর্বক এমন ন্যক্কারজনক কাজ করে আসছে।”

গত শনিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়ায় ফোন করে জোবায়েরকে ডেকে বেদম মারধর করেন ‘প্রলয়’ গ্যাংয়ের ১০-১৫ জন সদস্য। এতে লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় জোবায়েরের। এ ঘটনায় রোববার (২৬ মার্চ) শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা সাদিয়া আফরোজ খান। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনের নাম উল্লেখ করেন তিনি। অভিযোগ পাওয়ার পর দুই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে শাহবাগ থানা পুলিশ।

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!