চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলীর গায়ে হাত তোলা নারী শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কার এবং সনদ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করে বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাব। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাবের পাঠাগার সম্পাদক লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী মো. জিহাদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল হক বলেন, ছাত্র শিক্ষকের সম্পর্ক হবে অত্যন্ত সুগভীর ও ভালো সম্পর্ক। ফ্যাসিবাদ এখনো নামে-বেনামে বিদ্যমান আছে। কখনো আনসার নামে, কখনো সাধারণ শিক্ষার্থী নামে তাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি আরেকজন শিক্ষকের পাশে থাকতে চাই। এমন বিব্রতকর অবস্থার সুষ্ঠু সমাধান চাই।
বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাবের পাঠাগার সম্পাদক মো. জিহাদ বলেন, ‘আমরা কাজ করছি মূল্যবোধ সংরক্ষণে। আমাদের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. কোরবান আলী স্যারের ওপর প্রকাশ্যে হামলা ছাত্রীদের মূল্যবোধের চরম অবনতির বহিঃপ্রকাশ। এই হামলাকারী গোষ্ঠীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে না পারলে প্রশাসন ব্যর্থ বলে গণ্য হবে। শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষার্থে হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শান্তি নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।’
আমাদের দাবি সমূহ হলো- আফসানা এনায়েত এমির স্থায়ী বহিষ্কার ও সনদ বাতিল করতে হবে, যারা ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সনাক্ত করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে অন্যথায় আমরা আরো কঠোর আন্দোলনে যাব।
বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাবের উপদেষ্টা, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, একটু আগে একজন অভিভাবক আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, এ কেমন অসভ্যতা! ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়েও কোনো শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার দুঃসাহস দেখিনি। আমাদের বাসায় হামলা করেছে। কিন্তু, তারা গায়ে হাত তোলার সাহস করেনি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীলরা থাকবে, কনজারভেটিভরাও থাকবে। কিন্তু অবশ্যই বাউন্ডারির মধ্যে থাকতে হবে। শিক্ষকরা হলো রেডলাইন। শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর আইনের ৩৩ ধারা অনুযায়ী যেকোনো কিছু করতে পারে। অথচ, এই প্রশাসনের এখনও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নাই।
প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা হলের সামনের নৌকা প্রতীক ও শেখ হাসিনার ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় দর্শন বিভাগের প্রফেসর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহকারী প্রক্টর ড. মো. কোরবান আলীর গায়ে হাত তোলেন আইন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা এনায়েত এমি। গত ১১ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও ফুটেজে ওই ঘটনা সবার নজরে আসে।