রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ট্রেনের বগিতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫০ জন শিক্ষক।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এই প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে শিক্ষকদের পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার।
বিবৃতিতে বলা হয়, “মঙ্গলবার ভোরে নেত্রকোণা থেকে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অনেকে আহত হয়েছেন। বর্বর এ ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মানবতাবিরোধী জঘন্যতম এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
এতে আরও বলা হয়, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে নির্মমতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা একাত্তরের বর্বরতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। মানবতাবিরোধী এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ২০১৩ সাল থেকে অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। নিরীহ গবাদিপশু, গাছ-পালা, রাস্তা-ঘাট, যানবাহন কোনো কিছুই এদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। অনেক মানুষ এখনো অগ্নিসন্ত্রাসের ক্ষত বহন করে চলেছেন। পরিবারের কর্মক্ষম সদস্যকে হারিয়ে অনেক পরিবার সর্বস্বান্ত হয়েছে। অনেক নিষ্পাপ শিশু এতিম হয়েছে। ধারণা করা যায়, রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ একটি গোষ্ঠী দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নস্যাৎ করার জন্য ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই এ ধরনের ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। নিরাপদ রেলযাত্রাকে বিঘ্নিত করার জন্য সন্ত্রাসীরা যাত্রীবেশে এ ধরনের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হোক এবং যাত্রীদের নিরাপত্তায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপরোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এ ধরনের বর্বর ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে একাত্ম হয়ে প্রতিবাদ জানাতে দেশের বিবেকবান নাগরিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”