বাকৃ‌বি‌তে ছাত্রলীগ কর্মীদের অব‌্যাহ‌তির হিড়িক

ফেসবুকে পোস্ট শেয়ার করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে গণহারে অব্যাহতি নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বিভিন্ন অনুষদ, হল ও বর্ষের শিক্ষার্থীরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা নিজেদের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট শেয়ার করে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন। এছাড়াও অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভবিষ্যতে সম্পৃক্ত না হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নিজের বিবেকবোধ ও আত্ম অনুশোচনা থেকে, দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র ব্যবস্থা, মা-বোন-ভাইদের ওপর হামলা এ সকল অবস্থা বিচার বিবেচনা করে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন।

অব্যাহতির ঘোষণা দিয়ে ভেটেরিনারি অনুষদের ও ফজলুল হক হলের একজন শিক্ষার্থী লেখেন, “আমি  ছোট থেকে ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিজের মধ্যে ধারণ করে বড় হয়েছি। ছাত্রদের হাত ধরে ন্যায়ের পক্ষে অকাতরে প্রাণ দেওয়ার ব্যথা অনুভব করে বড় হয়েছি। আমি যে ছাত্ররাজনীতির স্বপ্ন দেখেছি, যে ছাত্ররাজনীতি চেয়েছি, সেটা নিতান্তই ছাত্রদের অধিকারের জন্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে সংঘটিত ঘটনাগুলোর জন্য আমি অত্যন্ত লজ্জিত। আমি সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ছিলাম, আছি, থাকব। আমি ছাত্ররাজনীতির বাইরে থেকে মানুষের জন্য যতটুকু সাহায্য সহযোগিতা করা সম্ভব করে যাব। আজ এই মুহূর্ত থেকে, সজ্ঞানে সুস্থ মস্তিষ্কে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ফজলুল হক হল ইউনিট থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি।”

শহীদ শামসুল হক হলের আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, “আমি বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের একজন সাধারণ কর্মী। এই পরিচয়ের চেয়ে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেওয়াটা গর্বের এবং গৌরবের। ছাত্র রাজনীতির এই সময়কালে পেয়েছি সিনিয়রদের অকৃত্রিম ভালোবাসা, জুনিয়রদের সম্মান এবং বন্ধুদের সাপোর্ট যা আমার স্মৃতিতে চির অম্লান। নিজের বিবেকবোধ ও আত্ম অনুশোচনা থেকে, দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র ব্যবস্থা, মা-বোন-ভাইদের ওপর হামলা এ সকল অবস্থা বিচার বিবেচনা করে আমি আমার ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। যতদিন রাজনীতি করেছি, সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে করার চেষ্টা করেছি। কখনো কোনো অন্যায়ের সঙ্গে ছিলাম না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মাধ্যমে বর্তমানে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ তার ঐতিহ্য হারিয়ে কলুষিত।”