জাকসু নির্বাচন

ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ও শিবিরের পাল্টাপাল্টি অবস্থান


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫, ০১:৫০ পিএম
ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ও শিবিরের পাল্টাপাল্টি অবস্থান
শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি : প্রতিনিধি

জাকসু নির্বাচন নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাস। পূর্বঘোষিত রূপরেখা অনুযায়ী শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু জাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত পরিবেশ পরিষদের পরামর্শক্রমে যথাসময়ে ঘোষণা করা হয়নি নির্বাচনী তফসিল।

ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলো চাচ্ছে, জাকসুর গঠনতন্ত্রসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন হোক। এ নিয়ে তারা শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। অন্যদিকে তফসিল ঘোষণাসহ দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাল্টা অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটভুক্ত ২টি সংগঠন, গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন, জুলাই গণহত্যা বিচার নিশ্চিত পরিষদসহ বেশ কিছু সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। এসময় অনতিবিলম্বে জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানান তারা। অন্যথায় আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন নেতাকর্মীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্য সচিব তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, “ছাত্রদলের ব্যানারে কিছু অছাত্ররা আজকে রেজিস্ট্রার ভবনে সামনে অবস্থান নিয়ে জাকসুর তফসিল ঘোষণা না করতে চাপ প্রয়োগ করেছে। তাই তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। তার প্রেক্ষিতে জাকসুর পক্ষের সব শক্তিকে এক করে আমরা ক্যাম্পাসে মিছিল দিয়ে অবস্থান নিয়েছি। আসন্ন ভর্তি পরীক্ষার আগে তফসিল ঘোষণা না করা হলে ভর্তি পরীক্ষা হতে দেওয়া হবে না।”

গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “ভর্তি পরীক্ষার আগেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় ভর্তি পরীক্ষা হতে দেওয়া হবে না। প্রশাসন গত এক মাস আগে জাকসু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটা রোডম্যাপ প্রকাশ করেছিল, সেই লক্ষ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল এবং আজকে ছিল তফসিল ঘোষণার তারিখ। কিন্তু একটা কুচক্রী মহলের দাবির প্রেক্ষিতে জাকসু বানচালের চেষ্টা করছে।”

প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া জাকসু সুষ্ঠু হবে না, সেজন্য সংস্কার চেয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক জানান, জাকসু নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে যারা বসে আছেন, তারা আওয়ামী লীগের দোসর। তাদের বসিয়ে রেখে কোনোভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাছাড়া জাকসুর যে গঠনতন্ত্র রয়েছে, সেটা অনেক আগের। এই গঠনতন্ত্র সংস্কার করতে হবে এবং এই কাজগুলো সম্পন্ন করে নির্বাচন দিতে হবে অন্যথায় তা মেনে নেওয়া হবে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “ছাত্র সংগঠনগুলো দুইটি পক্ষ বিভক্ত হয়েছে। একপক্ষ নির্বাচন সূচি অবিলম্বে ঘোষণা করার দাবি জানাচ্ছে, অন্য পক্ষ নির্বাচনের সূচি ঘোষণার আগে সংস্কার কমিশন গঠন চাচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে পরিবেশ পরিষদের পরামর্শক্রমে জাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র সংস্কারের বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছি।”

জাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটি গঠন
জাকসু নির্বাচনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রবকে আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যের জাকসু গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিশন গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সংস্কার কমিটিকে আগামী ৪ কর্মদিবসের মধ্যে সংস্কার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে বলা হয়েছে। 

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!