বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা অপরাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে মন্তব্য করে এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছিল ছাত্রদল। তবে এই সংহতিকে রাজনৈতিকভাবে মদদপুষ্ট উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন বুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩ এপ্রিল) রাতে বুয়েটের ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে চলমান ছাত্র রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলনের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেন ওই শিক্ষার্থীরা।
ওই সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্ররাজনীতিবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণে ছাত্রদলের অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন’ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা বলেন, “বুয়েট শিক্ষার্থীরা, ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে চলমান আন্দোলনের এই সংকটপূর্ণ মুহূর্তে ছাত্রদলের এমন বক্তব্যকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করি এবং তাদের এই রাজনৈতিকভাবে মদদপুষ্ট সংহতিকে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করছি।”
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, “২০২০ এর জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা লঙ্ঘন করে ছাত্রদল যখন বুয়েটে তাদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে সেই সময়ের অগ্রজ ব্যাচ ‘পৌনঃপুনিক ১৫’ তাদের এই কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করে এবং উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) বরাবর তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তখনও এর প্রতিবাদ জানায় এবং সামনেও আমরা ক্যাম্পাসে সকল ধরনের ছাত্ররাজনীতি প্রবেশের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা অব্যাহত রাখব।”
শিক্ষার্থীরা বলেন, “পরবর্তীকালে অন্য কোনো সংগঠনও যদি এমন বক্তব্য দিয়ে আমাদের আন্দোলনের দাবি এবং অবস্থানকে ঘোলাটে করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়, তবে আমরা তাদেরও প্রত্যাখ্যান করব।”
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, “হিজবুত তাহরীরর মতো নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠনের অস্তিত্বকেই আমরা সমর্থন করি না। সেখানে এরূপ নিষিদ্ধ সংগঠনের সমর্থন বা সহানুভূতি গ্রহণ করার প্রশ্নই আসে না। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিজেদের ক্যাম্পাসে সব দলের ও মতের লেজুড়বৃত্তিক সাংগঠনিক রাজনীতি এবং মৌলবাদী দলসমূহের বিপক্ষে আছি এবং থাকবো। আমাদের এই অবস্থান সকল দল ও মতের ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।”
বুধবার বর্জন ছিল ক্লাস-পরীক্ষা
বুধবার পূর্ব ঘোষিত পরীক্ষা থাকলেও তাতে অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, এইদিন ২০১৮ ব্যাচের একটি টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, যেটি ঈদের আগেই শেষ পরীক্ষা। যদি ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস খোলা ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, চলমান আন্দোলনে কেউই ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। তাছাড়া বৃহস্পতিবার বন্ধ, খুলবে ১৭ এপ্রিল। পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী সেইদিন একটি পরীক্ষা রয়েছে। এখন এটি নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না, শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেবে কিনা। কারণ এটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত।