বেরোবির সামাজিক সংগঠনগুলো খুঁড়িয়ে চলছে


এ কে জায়ীদ, বেরোবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৪, ০২:০৬ পিএম
বেরোবির সামাজিক সংগঠনগুলো খুঁড়িয়ে চলছে

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ২০টিও বেশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম চালালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে সংগঠনগুলোকে কোনো আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয় না। ফলে সংগঠনগুলোকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হচ্ছে।

সংগঠনগুলোর কর্মীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আর্থিক প্রণোদনা না দেওয়া হলে ক্যাম্পাসে সংগঠনগুলোকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ডিবেট ক্লাব, তিন সাংস্কৃতিক সংগঠন, একটি সোসাইটি, তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, দুটি সাহিত্য সংগঠন এবং একটি সাংবাদিক সংগঠনসহ ২০ বেশি সংগঠন রয়েছে। এদের মধ্যে কোনো সংগঠনের আলাদা কোনো ফান্ড নেই। কোনো প্রোগ্রাম হাতে নিলে সংগঠনের কর্মীদের থেকে এবং সংগঠনের শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছা থেকে টাকা নিয়ে প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা হয়। প্রোগ্রামের টাকার ঘাটতি হলে পুনরায় সংগঠনের কর্মীদের থেকে টাকা তোলা হয়। আবার জরুরি প্রয়োজনে সংগঠনের টাকা প্রয়োজন হলে কারো কাছ থেকে ধার নিয়ে প্রয়োজন মেটান। টাকার অভাবে বেশির ভাগ সংগঠনই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে না।

কর্মীরা জানান, ক্যাম্পাস তুলনামূলক নতুন এবং জেলা শহরে হওয়ায় এখানকার অনুষ্ঠানগুলোতে কেউ পৃষ্ঠপোষক হতে চান না। পৃষ্ঠপোষক ছাড়া বড় কোনো অনুষ্ঠান করাও যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলো যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই কাজ করে থাকে, সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংগঠনগুলোকে এককালীন সহযোগিতা করলে সংগঠনগুলোকে কোনো অনুষ্ঠান চান কিংবা যেকোনো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

বিতর্ক সংগঠন বিআরইউডিএফ সাধারণ সম্পাদক রিশাদ নূর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সংগঠন অনেক কৃতিত্ব নিয়ে এসেছে। আমরা দেশসেরা ক্লাবগুলোর মাঝে কখনো ছিলাম দশম, কখনো প্রথম। এসব প্রতিযোগিতায় যাওয়া আসা পুরোটাই আমাদের শিক্ষার্থীদের নিজেদের পকেট থেকে দিয়ে করি।”

বাঁধনের সভাপতি রাকিব উল হাসান বলেন, “আমরা বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও রক্তদাতা সংগ্রহের পাশাপাশি বাঁধন বেরোবি ইউনিট বেরোবির ক্যাম্পাসে অনেক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়। ক্যাম্পাসের উপস্থিত মোটামুটি ১৪-১৫০০ জন ডোনার, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের নিয়ে ইফতার মাহফিল, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, বার্ষিক সাধারণ সভা, ডোনার সংবর্ধনা সাপ্তাহিক ব্লাড গ্রুপিং নামক ক্যাম্পেইন। আমাদের প্রায় সব প্রোগ্রামের ব্যয় আমাদের ইউনিটের সব কর্মী, উপদেষ্টার চাঁদা ও শুভাকাঙ্ক্ষী শিক্ষকদের কন্ট্রিবিউশান এ বহন করে থাকি।”

ফিল্ম এন্ড আর্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অর্ণব দাস বলেন, “আমাদের সংগঠন পরিচালনার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হয় তা মূলত সংগঠনের সদস্যদের থেকেই নেওয়া হয়। মাসিক মিটিংয়ে সদস্যদের থেকে প্রাপ্ত অর্থ অতি অল্প পরিমাণ হয়, যা দিয়ে একটা প্রোগ্রাম করা বেশ কষ্টসাধ্য। এছাড়া আমাদের নির্দিষ্ট স্থানে বসে মিটিং করা সম্ভব হয় না। আমরা যদি একটা নির্দিষ্ট স্থান পাই তাহলে আমাদের মিটিং করা, কোনো প্রোগ্রাম করতে বেশ সুবিধা হবে।”

Link copied!