নানা সমস্যায় ও অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল। দীর্ঘদিন সুপেয় পানির সংকটসহ ডাইনিং অব্যবস্থাপনা, হলের চারপাশ অপরিষ্কার, রিডিং রুম ও পেপার রুম অগোছালো সমস্যাও বড় আকার ধারণ করেছে। এতে ভোগান্তিতে রয়েছেন হলের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, শুরু থেকেই সংকট রয়েছে সুপেয় পানির। যার কারণে কেউ কেউ ওয়াশরুমের পানি পান করছেন। এতে করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। আবার কেউ কেউ নিচ থেকে টিউবওয়েরের পানি এনে পান করেন। তবে সেই পানিতেও রয়েছে উচ্চ মাত্রায় আয়রন।
অন্যদিকে লোকবল থাকলেও তদারকির অভাবে অপরিচ্ছন্ন থাকে টয়লেটগুলো। অপরিচ্ছন্ন এসব টয়লেটের মেঝেতে পানি জমে স্যাঁতসেতে হয়ে থাকে এবং সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এসব টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে অনেকটা বাধ্য হয়ে। এছাড়াও হলের ড্রেন ও চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয় না ফলশ্রুতিতে মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, অনেকদিন ধরে দুটি ব্লকে বেশ কয়েকটি ওয়াশরুমের দরজা ভেঙে গেছে। প্রতিটি তলায় বেসিন-টয়লেট অপরিচ্ছন্ন। হলে বাইরের চারপাশেও একই চিত্র। হলের পাশে ফাঁকা জায়গাগুলো ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া ডাইনিং পরিচালনায় হল প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই। সবসময় ডাইনিং চালু না থাকায় শিক্ষার্থীদের নির্ভর করতে হয় ক্যাম্পাসের গেট সংলগ্ন টংদোকানে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ডাস্টবিন না থাকায় সবাই যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। আবার ডাস্টবিন থাকলে নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। প্রতি বছর একবারের বেশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় না। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি বিনোদনের প্রয়োজন থাকলেও হল প্রশাসন এক্ষেত্রে উদাসীন।
এ ব্যাপারে হল প্রভোস্ট ড. মো. আমিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি সকল বিষয়ে অবগত হয়েছি। আমি অল্প কিছু দিন হলো হলের দায়িত্ব পেয়েছি। এর মধ্যে যতটুকু সম্ভব সমাধান করেছি, বাকিটুকু অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সমাধান করব। আর পানির জন্য একটি আবেদন করেছি, খুব দ্রুত সেটি বাস্তবায়ন হবে। ইতোমধ্যে হলের মধ্যে একটি নলকূপ স্থাপন করেছি।”
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ বলেন, “আমি একে একে সব কাজ করব। আশেপাশে পরিষ্কার করার জন্য কাজ শুরু হবে অনতিবিলম্বে। আশপাশ পরিষ্কার হলে আশা করি মশার উপদ্রব কমে যাবে। ফগার মেশিন প্রথমত পৌরসভা থেকে আনতে চেয়েছিলাম, তা করব না। আমরা প্রশাসনের অর্থায়নে নিজস্ব ফগার মেশিন কিনব, যাতে প্রতি সপ্তাহে এটি ব্যাবহার করতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “হলের সকল শিক্ষার্থীর সুবিধার কথা ভেবে সবার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যে কাজগুলো করা দরকার, আমি অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সেগুলো করব।”