বর্তমান প্রজন্মের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’। বাংলার ইতিহাসের আন্দোলন-সংগ্রামে এ নামটি অবিভাজ্যভাবে জড়িয়ে আছে। যাঁর এক ডাকে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন সূর্যসন্তানেরা। তবে পরিতাপের বিষয় এই যে পাকিস্তানিরা যা করতে পারেনি, কিছু দুর্নীতিবাজ সামরিক কর্মকর্তা তা করেছিলেন। তারা স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে হত্যা করেছিল। সেই ঘটনার কথা মনে হলে আজও শরীর শিউরে ওঠে। স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ-সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে নতুন প্রজন্মের আগ্রহের শেষ নেই। এর ধারায় এই শোকের মাসে ‘তরুণদের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে লিখেছেন কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণ ও দেশের প্রতি তাঁর ভালোবাসার বিষয়টি ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেছেন, “‘কেউ জন্মগতভাবে মহান বা মহত্ত্বের লক্ষণ নিয়ে জন্মায়, আর কেউ স্বীয় প্রচেষ্টায় মহানুভবতা অর্জন করে’— এ কথাগুলো উইলিয়াম শেকসপিয়ারের। বাংলাদেশ নামের দেশের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্ব ও সম্পর্ক নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। যখন কথা বলার অধিকারসহ বিবিধ অধিকার নিয়ে কথা বলি-লিখি তখন বায়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টি, ঊনসত্তর একাত্তরসহ দীর্ঘ মুক্তির সংগ্রামের পথ ধরে স্বাধীনতা অর্জনের প্রক্রিয়াগুলো চেতনার আলোয় আলোকিত করে। বাংলাদেশের দীর্ঘ মুক্তির সংগ্রাম থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ—সবখানেই অবধারিতভাবে ছিল শেখ মুজিবের উপস্থিতি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পরেও এর স্বীকৃতিতে কারও বাধা ছিল না। কিন্তু পঁচাত্তরের বিয়োগান্ত দৃশ্যপটের পর শেখ মুজিবকে ইতিহাসের সোনালি অধ্যায় থেকে মুছে দেওয়ার একটা প্রবণতা শুরু হয়। ‘আওয়ামী লীগ’ বাংলাদেশের দীর্ঘ মুক্তির সংগ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে উঠেছিলেন তার নেতৃত্বগুণ ও দেশের প্রতি ভালোবাসার কারণে।”
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জানা-অজানার শেষ নেই। তাঁকে নিয়ে অনেক গল্প-কবিতা লেখা হয়েছে। এরপরও তরুণদের মধ্যে আগ্রহ যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই হয়তো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের ‘সমার্থক’ উল্লেখ করেছেন ঢাবির ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার বিভাগের শিক্ষার্থী সুইটি দাশ।
সুইটি দাশ বলেন, “বাংলাদেশের ‘সমার্থক’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যেই নামটি বাংলাদেশ ও জাতির মুক্তির আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, যাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পরাধীন বাঙালি খুঁজে পেয়েছিল মুক্তির দিশা। আজকের বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা হয়তো তিনি বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাস্তবে রূপ নিত।”
সুইটি দাশ আরও বলেন, “বাঙালি স্বপ্নে বাঁচে, আশায় বাঁচে। বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে মুক্তির আশার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। যা বাস্তবে পূরণ করে পরাধীন বাঙালিকে দিয়েছে মুক্তি। বঙ্গবন্ধু নেই, তবে যত দিন বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন জড়িয়ে থাকবে বাঙালি জাতি পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নাম।”
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা যেন শেষ হয়েও হয় না। ছোট থেকে বড়। প্রায় সবার মুখেই তার জয়গান।
বঙ্গবন্ধু আদর্শ প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া লিশা বলেন, “তারুণ্যের চোখে আবেগ, ভালোবাসা এবং আদর্শের নাম ‘মুজিব’। তারুণ্যের মেধা, যোগ্যতা, দুর্ভেদ্য শক্তিমত্তা ও অভিনবত্ব সর্বকালে প্রশংসিত। অসম্ভবকে সম্ভব করতে ঝুঁকি নিতে পারে শুধু তারুণ্য। একটি সমাজ, সভ্যতা ও জাতিসত্তার বিকাশে তারুণ্যের ভূমিকা অপরিসীম প্রশংসিত ও তাৎপর্যপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর অসীম সাহসিকতা, অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলি, প্রজ্ঞা আর দূরদর্শিতায় দীর্ঘ সময় ধরে চলা তরুণদের আদর্শ। তারুণ্যের কাছে মুজিব নামটি গৌরব এবং অহংকারের। বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, কর্মজীবন ও আদর্শ তরুণদের আজও অনুপ্রাণিত করে। জাতির পিতার আদর্শ, দর্শন ও কর্মচিন্তা তরুণদের চলার পথের পাথেয়।”
জান্নাতুল মাওয়া লিশা আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধুর কীর্তি আর মহত্ত্ব প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে এবং করবে। তরুণ মনে সাহস জুগিয়ে জীবনের সব সংগ্রামে জয় লাভ করতে সাহায্য করবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে উন্নয়নের ছোঁয়ায় বিশ্বদরবারে সম্মানজনক আসনে অধিষ্ঠিত করবে। বঙ্গবন্ধু থেকে যাবে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায়।”
বঙ্গবন্ধুকে তরুণদের আগামী পথ চলার ‘পাথেয়’ উল্লেখ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাফিউল আজাদ রাফি। তিনি বলেছেন, “পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজ অবধি যুগে যুগে এমন সব মনীষীর আবির্ভাব ঘটেছে, যাদের হাত ধরে রচিত হয়েছে মানবতার মুক্তির সনদ। তেমনই এক মুক্তির কারিগর, আলোর দিশারি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির শত বছরের আবেগ ও ভালোবাসা।”
রাফিউল আজাদ রাফি বলেন, “অত্যাচারী পাকিস্তানের শোষণ-বঞ্চনার জাঁতাকলে যখন বাঙালি জাতির জীবনীশক্তি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছিল, তখন আলোর দিশারি হয়ে আগমন ঘটেছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি পুরো জাতিকে শোনালেন স্বাধীনতার বীজমন্ত্র। আঙুলের ইশারায় পুরো জাতিকে একীভূত করে বজ্রকণ্ঠের ঘোষণায় শোষক গোষ্ঠীর কবল থেকে ছিনিয়ে আনেন স্বাধীনতা। এরপর শুরু করেন তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ। বঙ্গবন্ধু মানেই শক্তি, সাহস, উৎসাহ আর প্রেরণা। তাঁর অসাধারণ বাগ্মিতা, তীক্ষ্ণবুদ্ধিসম্পন্নতা, মানবিকতা, মানুষের প্রতি সহমর্মিতার গুণেই তিনি তরুণদের কাছে চির অমলিন।”
আগস্ট এলেই বাঙালি হৃদয়ে নেমে আসে শোকের আঁধার। মনে পড়ে যায় সেই ভয়াল রাতের কথা। যে রাতে সপরিবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে দেখেনি। তবে জেনেছে তাঁর অবদান ও নেতৃত্বের কথা।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নেতৃত্ব প্রসঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিক হাসান বলেন, “নেতৃত্বের আদর্শ মানেই বঙ্গবন্ধু। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নানা ধরনের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে একটি বিষয় খুব ভালোভাবেই লক্ষ করেছি। সেটি হচ্ছে ‘নেতৃত্ব’ দেওয়া। নেতৃত্বের বিষয়টি বাইরে থেকে দেখতে যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে ঠিক ততটা সহজ নয়। নেতা হওয়ার জন্য যে গুণাবলি প্রয়োজন, তা শিখতে হয়: পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে, একটি আদর্শ নেতাকে অনুসরণের মাধ্যমে। বাঙালি হিসেবে আমরা সৌভাগ্যবান যে সেই আদর্শ নেতার সন্ধান করতে আমাদের দেশের গণ্ডির বাইরে যেতে হয়নি। আমাদের দেশেই জন্মগ্রহণ করেছেন নেতৃত্বের উৎকৃষ্ট উদাহরণ, বাঙালি জাতির নেতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।”
আতিক হাসান আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধুর বাগ্মিতা আজ আমার মতো লাখ লাখ তরুণদের অনুপ্রেরণা। কথা দিয়ে মানুষের মন জয় করার যে গুণ, তা বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যগুলো শুনলেই অনুভব করা যায়। আমার বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধুর এই অনুকরণীয় আদর্শ আসন্ন শতাব্দীগুলোতেও সব তরুণের আদর্শ হয়ে থাকবে।”
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান খান জয় মনে করেন, ‘তারুণ্যের মনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিফলিত হোক’। তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তরুণদের আদর্শ ও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের রূপকার। তাঁর মৌলিক বিশ্বাসগুলো শান্তি, সমাজতন্ত্র, মানবাধিকার, জাতীয়তা ইত্যাদি। তাই তো তিনি স্বপ্নের দেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘যিনি যেখানে রয়েছেন, তিনি সেখানে আপন কর্তব্য পালন করলে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে না।’ আমি মনে করি, প্রতিটি তরুণ-তরুণীর মনে এই আদর্শ প্রতিফলিত হলে দেশে বিশৃঙ্খলা, দাঙ্গাহাঙ্গামা, অরাজকতা, দুর্নীতি লোপ পাবে। আর এর মাধ্যমেই দেশ আরওও দ্রুত উন্নত হবে। কারণ আজকের তরুণরাই আগামীর কর্ণধর। তরুণদের মনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণের মধ্য দিয়েই সেই স্বপ্নের দেশ গড়ে ওঠা সম্ভব।”
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী সাদিয়া সুলতানা মনে করেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্নকে ঘাতকরা হত্যা করতে পারেননি।’ তিনি বলেন, “যে মহান নেতার হাত ধরে বাঙালি দেখেছে স্বাধীনতার সূর্য, যে নামটি পুরো বাঙালির জন্য অনুপ্রেরণামূলক, তিনি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতাযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে কিছু দুষ্কৃতকারী, জাতির শত্রু, দেশের শত্রু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করলেও তার স্বপ্নগুলোকে তারা হত্যা করতে পারেননি। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এসেও আমরা তার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু তাঁর সোনার বাংলাকে যেভাবে দেখতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশ সেই পথ ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই অগ্রযাত্রা অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলার মুখ আরও সমুজ্জ্বল করবে।”
যদি রাত পোহালে শোনা যেত,
বঙ্গবন্ধু মরে নাই।
যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো,
বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই, মুক্তি চাই...।
তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা,
আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা।
বরেণ্য গীতিকবি হাসান মতিউর রহমানের লেখা গানটি আজও চমকে দেয় বাঙালির হৃদয়। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে অনেক কিছুই ঘটেছে। রাজনীতির আদর্শেও পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যা চেয়েছিলেন, তা যেন হয়েও হচ্ছে না। তাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মমিনুর রহমান জানিয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা চাই।’
মমিনুর রহমান বলেন, “বঙ্গবন্ধু একটি নামের চেয়ে বেশি; তিনি বাঙালি জনগণের প্রিয় বন্ধু। তিনি এমন একজন দর্শনশীল, যিনি স্বর্গীয় বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধু যা চেয়েছিলেন, তার কতটুকু বাস্তব হয়েছে। তবে আমরা আজও তার স্বপ্ন সত্যি করতে অদূরেই রয়ে গেছি। সোনার বাংলার স্বপ্নে বিভোর দেশের ১৮ কোটি মানুষ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে, এই দায়িত্ব সব সমাজের সবাইকে নিতে হবে। যেন চিন্তনশীল মনোভাব জাগ্রত হয়।”
মমিনুর রহমান আরও বলেন, “একটি জাতির উন্নতির পথশ্রেণি তার জনগণের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এই শ্রেণির মধ্যে অধ্যাপক, ডাক্তার, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ জড়িত। বিশেষ করে তরুণেরা একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সব শ্রেণির মানুষকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। এই শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার প্রতিফলন হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
জাতির পিতা ও বাংলাদেশ একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ, যেখানে একটি ছাড়া অন্যটি অর্থহীন বলে মন্তব্য করেছেন করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থী রিফাহ সানজিদা শাম্মি। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। সেই মহান অবিসংবাদিত নেতাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতের আঁধারে নৃশংসভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে এই স্বাধীন বাংলায় কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়। ঘাতক চক্র শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি বরং তাদের যন্ত্রণাময়ী অস্ত্রের আঘাতে প্রাণ হারাতে হয়েছে তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তার ৩ সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেলসহ আরও অনেকের। সৌভাগ্যক্রমে সেদিনের এই নৃশংসতা থেকে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা। ঘাতক বাহিনী ভেবেছিল বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার মধ্য দিয়ে আবারও দেশকে পরাধীন করতে। কিন্তু তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আর আদর্শের স্মৃতিরেখায় দেশ আজ উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে। বাংলার মানুষের মাঝে চিরকাল অমর থাকুক বঙ্গবন্ধুর সেই পবিত্র আদর্শ ও স্বপ্ন।”
নোবিপ্রবির আরেক শিক্ষার্থী রহমত উল্ল্যাহ আরিফ বলেন, “আগস্ট মাস বাঙালির জীবনের এক কালো অধ্যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে যার নামটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দীপ্যমান তিনি হলেন বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি তাদের নক্ষত্র ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হারিয়ে ফেলে। বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালির নয়, বরং সমগ্র পৃথিবীর এক বলিষ্ঠ নেতা ও আদর্শ। ১৫ আগস্ট ইতিহাসের সেই জঘন্যতম দিন। এই দিনে আমরা তরুণ প্রজন্মরা মুজিব আদর্শকে মুখে নয় অন্তরে লালন করি। আমার বিশ্বাস তরুণ প্রজন্মই পারে আদর্শ লালনের মধ্য দিয়ে মুজিবকে ভাস্বর করে রাখতে। জাতির পিতাকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি আমাদের মনে বেদনার সৃষ্টি করে, আমরা সেটিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে উপলব্ধি করি। তিনি শত কোটি বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে আছেন, চিরকাল থাকবেন।”