বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষিতের গণতন্ত্রের জন্য লড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। তিনি বলেছেন, “গোটা বিশ্ব যখন দুভাগে বিভক্ত। একদিকে শোষিত, আরেক দিকে শাসক। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি শোষিতদের পক্ষে’। বঙ্গবন্ধু বিশ্বময় শোষিতের পক্ষে ছিলেন। তিনি প্রচলিত পুঁজিবাদ সমাজ ভেঙে মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন।”
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ডিবেটিং সোসাইটির আয়োজনে জাতীয় বক্তৃতা প্রতিযোগিতা ও শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে সবাই শ্রম দিয়ে যাচ্ছি উল্লেখ করে মশিউর রহমান বলেন, “আমরা বিন্দু বিন্দু করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে যাচ্ছি। সেটা আমাদের সবার সম্মিলিত শ্রমে। যখন চরম দুঃসময় আসে, পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটে, তখন ভাবি বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হতে যাচ্ছে কিনা। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার যখন লাখ লাখ মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়ন করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে। তখন আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। এখন মনে হয় এই বঙ্গ দেশে, এই অঞ্চলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আসলে এক অনন্য যাত্রা সুনিশ্চিত করেছেন।”
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “সাড়ে সাত কোটি মানুষকে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ ভাষণে এক করেছিলেন। সেই থেকে আমাদের যেকোনো বিপর্যয়ে, সেটা হোক প্রাকৃতিক কিংবা শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক বিপর্যয়। বাঙালি এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তার মোকাবিলা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক শাসনের যে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল, তার অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র মুক্তির সোপান হয়েছে।”
মশিউর রহমান বলেন, “১৯৭১ সালে আমাদের মা-বোনেরা গেরিলা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়ে দেশ মাতৃকার সুরক্ষায় বন্ধন বেধেছেন। আমাদের নির্যাতিত মা-বোনদের মানচিত্রে গড়ে উঠেছে এ স্বদেশ। কিন্তু আমাদের পিতা যখন বাংলাদেশের হাল ধরতে গেলেন। দেখলেন পদে পদে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতি গ্রাস করছে। বারবার তার মনে হয়েছে পাকিস্তানি প্রেতাত্মা বুঝি যায়নি। তিনি তখন বললেন, ‘প্রচলিত এই সমাজ ব্যবস্থা আমি ভেঙে নতুন সমাজ গড়ব’। তিনি বললেন, দ্বিতীয় বিপ্লবের কথা, তিনি সমাজতান্ত্রিক দর্শনের কথা সামনে আনলেন, বললেন, ‘অন্য কোনো দেশ থেকে নয়, নিজস্ব আদর্শে নিজস্ব সমাজতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলব।’”
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, সংগঠনটির মডারেটর মো. মেফতাহুল হাসানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান। প্রথম রানার আপ হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রোকসানা আক্তার এবং দ্বিতীয় রানার আপ হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবিনা জাহান।