এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম পর্যায়ের আবেদনের সময় দুইদিন বাড়ানো হয়েছে। ভর্তিচ্ছুরা আগামী ১৩ জুন রাত ৮টা পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।
এর আগে ১১ জুন পর্যন্ত আবেদনের সময় ছিল। পুনঃনিরীক্ষণে যাদের ফল পরিবর্তন হবে, তাদেরও এই সময়ের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এবারও শিক্ষার্থীদের ফলের ভিত্তিতে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে হবে। তিন পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ করা হবে। অনলাইনে www.xiclassadmission.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাদশে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
এই ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোনো ‘ভুয়া’ ওয়েবসাইট থেকে আবেদন না করার বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
গত ২৬ মে থেকে একাদশে ভর্তির অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ওয়েবসাইটে গত শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত ১২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।
তারা ৬৬ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৪টি কলেজ পছন্দক্রমে রেখেছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে পেমেন্ট সম্পন্ন করেছেন ১২ লাখ ৯ হাজার ৬১৫ জন।
অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি এবং সর্বোচ্চ দশটি কলেজে পছন্দক্রমের ভিত্তিতে আবেদন করতে পারছেন শিক্ষার্থীরা।
একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে, তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে।
১২-১৩ জুন প্রথম পর্যায়ের আবেদন যাচাই, বাছাই ও নিষ্পত্তি করা হবে। এই সময়েই পুনঃনীরিক্ষণে ফল পরিবর্তিত শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হবে। এরপর ২৩ জুন রাত ৮টায় প্রথম পর্যায়ের নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে।
৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের ও ৯-১০ জুলাই তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ করা হবে।
৪ জুলাই রাত ৮টায় দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল ও প্রথম মাইগ্রেশনের ফল এবং ১২ জুলাই রাত ৮টায় তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল ও দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে।
এবার ঢাকা মেট্রোপলিটনের এমপিওভুক্ত কলেজে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা।
ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের কলেজে ভর্তির ফি হবে ৩ হাজার টাকা। জেলা পর্যায়ের কলেজে দুই ভার্সনের ভর্তির ফি ২ হাজার ও উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ের কলেজে দুই ভার্সনে ভর্তির ফি দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ননএমপিও বা আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ফি, সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার কলেজের বাংলা ভার্সনের জন্য সাড়ে ৭ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনের জন্য সাড়ে ৮ হাজার টাকা।
আর ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকার ননএমপিও কলেজে বাংলা ভার্সনে ভর্তির জন্য ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তির জন্য ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ের কলেজের বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৪ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ের কলেজে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকারি কলেজগুলো সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ভর্তি ফি নিবে। দরিদ্র, মেধারী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য কলেজগুলোকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
একাদশে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ১৫ জুলাই থেকে, চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। আর কলেজে ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে।
গত ১২ মে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এবার পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী, পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
আর শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২৫ লাখ। অর্থাৎ, এসএসসি পাস সবাই কলেজে ভর্তি হলেও আট লাখের বেশি আসন খালি থেকে যাবে।