দেশজুড়ে অব্যাহত নারী ও শিশু ধর্ষণের শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) নারী শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত এই মিছিলে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে নারী শিক্ষার্থীরা কে আর মার্কেটে এসে জড়ো হতে থাকেন। এরপর তারা সেখান থেকে মশাল মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবন হয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন ও ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আব্দুল জব্বার মোড় পর্যন্ত যায়। সেখান থেকে আবার কে আর মার্কেটের সামনে এসে মিছিলটি শেষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর গ্রাফিতির মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘খুন-ধর্ষণ নিপীড়ন রুখে দাঁড়াও জনগণ,’ ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আগুন জ্বালাও একসাথে,’ ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই,’ ‘তুমি কে? আমি কে? আছিয়া, আছিয়া!,’ ‘বিচার করো, করতে হবে, অবিলম্বে করতে হবে,’ ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন? ইন্টারিম জবাব চাই!’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডও দেখা যায়। সেগুলোর ছিল, ‘প্রতি ৯ ঘণ্টায় ২ জন নারী ধর্ষণের শিকার,’ ‘বিচার কই? ইন্টারিম?,’
‘তনু থেকে আছিয়া, আর কত ধর্ষণ?,’ ‘অনলাইন হ্যারেজমেন্টের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিগ্রহণ কর,’ ‘ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই!’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিদরাতুল মুনতাহা বলেন, “আমরা ততদিন রাজপথ ছাড়ব না, যতদিন ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত না হয়। তাদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। বরং গ্রাফিতি উপায়ে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। এখন পর্যন্ত ধর্ষণকাণ্ডে যাদের আটক করা হচ্ছে তাদের আবার ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এই বিচারহীনতা চলতে দেওয়া যায় না।”
আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, “আজকের এই আন্দোলন আমাদের অধিকারের আন্দোলন। তনু হত্যার অনেক আগ থেকেই দেশে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটছে। এখনও তনু হত্যার বিচার হয়নি। দেশের এই পরিস্থিতিতে একজন নারী হয়ে ঘরে বসে থাকা যায় না। ধর্ষকদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে, অন্যথায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।”