• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘ছাত্রলীগ ট্যাগ’ দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম
‘ছাত্রলীগ ট্যাগ’ দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন হলের এক শিক্ষার্থীকে ‘ছাত্রলীগ ট্যাগ’ দিয়ে মারধরের অভিযোগ এসেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী, নাম আল ইমরান।

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে হল প্রভোস্ট বরাবর বিচার চেয়ে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন আল ইমরান।

অভিযোগপত্রে আল ইমরান বলেন, “মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত আনুমানিক ১১টার দিকে পূর্বেই ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত কিছু নন এলোটেড শিক্ষার্থী প্রভোস্ট স্যারের উপস্থিতিতে ‘ছাত্রলীগ ট্যাগ’ দিয়ে আমার ওপর আক্রমণ করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের সহায়তায় আমি ওই স্থান থেকে চলে আসি।”

অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম ব্যাচের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাজিব, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তাজুন, ইংরেজি বিভাগের মিজানুর, ৫০তম ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদসহ আরও অনেকে। এ ছাড়াও হামলার মদদদাতা হিসেবে নাম রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮তম ব্যাচের নাটক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজের।

জানা যায়, হলের চলমান বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিটিং করে। সেই মিটিংয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়, সেটি হলের গ্রুপে পোস্ট করেন ইমরান।  মিটিংয়ে অনেকগুলো সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি বিষয় ছিল যে, হলের ৪-৫ তলার নন এলোটেড যারা আছেন সবাইকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে, তাদের এই সময়ের ভেতরে এলোটেড হলে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্য তলার নন এলোটেডদের যারা আছেন, সবাইকে হলত্যাগের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। অন্য হলে সিট না পেলে প্রভোস্ট স্যারে সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

এই বিষয়টি দেখে হলের যারা নন এলোটেড ছিল, তারা সবাই ইমরানের ওপর চড়াও হয়।

এরই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী হলের গ্রুপে আবার পোস্ট করে জানিয়ে দেয়, যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেটি আমার একার নয়, বরং মিটিংয়ে যারা উপস্থিত ছিল সবার। এ ছাড়া বলেছেন, “যেহেতু আমার পোস্টের মাধ্যমে বিতর্ক শুরু হয়েছে, সেই জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী এবং মিটিংয়ের সিদ্ধান্তকে স্থগিত করা হয়েছে।”

পরবর্তীতে সেই রাতে হলের নন এলোটেড শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্টকে কল করে হলে ডেকে নিয়ে আসে এবং বিষয়টি অবগত করে। এরপর ভুক্তভোগী ইমরানকে ডেকে পাঠানো হয় জবাবদিহির জন্য। তবে যখনই সে আসে তখন নন এলোটেড শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ইমরানের দিকে ধেয়ে যায় এবং তাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে মারধর করে।

এ বিষয়ের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, “তিনি আগেরদিন এসে আমাদের সবাইকে বলে গিয়েছিলেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হল ছাড়তে। আমরা তাকে অনুরোধ করেছিলাম, আমাদের সময় দিতে তবে। কিন্তু তিনি সময় দেননি। আবার তিনি দুপুর বেলা এসে পুনরায় আমাদের হল ছেড়ে যেতে বললে, আমরা হল প্রভোস্টকে জানাতে বাধ্য হই। স্যার আমাদের সবার সঙ্গে কথা বলতে টিভি রুমে আসেন। এ সময় সে এলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে তার দিকে তেড়ে যায়। তবে তার গায়ে কেউ হাত তুলেননি।”

ভুক্তভোগী আল ইমরান বলেন, “যারা আমাকে মারধর করেছেন, তারা সবাই হলের ব্লকে থাকে এবং ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। আমি কখনোই কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমি কেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়েছি এবং ন্যায্য দাবির পক্ষে আন্দোলন করেছি, সেই ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে আজ। তারা অন্যায়ভাবে আমাকে মেরেছে। আমি এর বিচার চাই।”

এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অব্দুর সাত্তার জয় বলেন, “অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত করে ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!