‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ এই স্লোগানে প্রতিবারের মতো এবারও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী প্রজাপতি মেলা।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক। মেলা চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
১২তম বারের মতো আয়োজিত দিনব্যাপী এই প্রজাপতি মেলায় ৫২-৬০ প্রজাতির প্রজাপতি প্রদর্শিত হয়।
উদ্বোধনকালে অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক বলেন, “প্রজাপতি নানাভাবে আমাদের উপকারে আসে। এ ছাড়া প্রকৃতিতেও প্রজাপতি অনেক অবদান রাখে। পাশাপাশি প্রজাপতির সৌন্দর্য আমাদের মনকে আপ্লুত করে। অন্যদিকে প্রজাপতি না থাকলে পরাগায়ণ হবে না। তাই প্রকৃতিতে প্রজাপতিকে টিকিয়ে রাখতে হবে। তার প্রেক্ষিতে প্রতিবছর সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রজাপতি মেলা আয়োজন করা হয়।”
অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রজাপতি হলো একটি ছোট্ট নান্দনিক প্রাণী, যা মানুষকে আনন্দ দেয়। দিনে দিনে এই প্রাণিটি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আগে জাহাঙ্গীরনগরে ১১০ প্রজাতির প্রজাতি পাওয়া যেত। এখন এই প্রজাপতির প্রজাতি সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫২-তে। গাছপালা বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রজাপতি রক্ষা করতে হবে। কারণ, প্রজাপতির পরাগায়নেই উদ্ভিদের ও গাছের সৃষ্টি। তাই মানুষের মাঝে প্রজাপতির গুরুত্ব বোঝানো এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাদের এই মেলার আয়োজন।”
মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, “শিশুদের যদি প্রজাপতির গুরুত্ব অনুধাবন করানো যায়, তাহলে তারা প্রজাপতির গুরুত্ব বুঝতে পারবে। প্রজাতির গুরুত্ব বুঝলে তারা প্রজাপতি রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারবে। এ জন্য শিশুদের জন্য ছবি আঁকা, প্রজাপতি ঘুড়ি ওড়ানো, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এবার শিশুদের জন্য কাকতাড়ুয়া পাপেট দলের পরিবেশনায় প্রজাপতির গল্পে পাপেট শো আয়োজন করা হয়েছে।”
এ বছর প্রকৃতি সংরক্ষণে সার্বিক অবদানের জন্য প্রজাপতি মেলায় তরুপল্লব সংগঠনকে বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী দীপ্ত বিশ্বাসকে বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চুক্তিভিত্তিক) রহিমা কানিজ, বন অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ, কিউট প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ মাতলুব আক্তার, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান প্রমুখ।
প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজাপতি মেলা আয়োজিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ‘কীটতত্ত্ব’ এই মেলার আয়োজন করে।
