• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অটোরিকশা বন্ধসহ ১১ দফা দাবি জাবি শিক্ষার্থীদের


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৪, ০৬:৩৭ পিএম
অটোরিকশা বন্ধসহ ১১ দফা দাবি জাবি শিক্ষার্থীদের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আফসানা করিম রাচি নিহতের ঘটনায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ ও চালককে গ্রেপ্তারসহ ১১ দফা দাবিতে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে তালা দেন তারা। এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।

এরপর শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তাদের ১১ দফা দাবির কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখলে তারা তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো অটোরিকশার চালককে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে; ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে জাবি মেডিকেল সেন্টারে মুমূর্ষু ব্যক্তির পর্যাপ্ত চিকিৎসার সুব্যবস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে; রাচিকে মরণোত্তর ডিগ্রি দিতে হবে এবং রাচির মৃত্যুর জন্য তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; অটোরিকশা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিতে হবে। বিকল্প হিসেবে প্যাডেলচালিত রিকশা এবং স্টুডেন্ট শাটল সার্ভিস চালু করতে হবে; সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণের আলোর ব্যবস্থা করতে হবে এবং সিসিটিভি নিয়মিত মনিটরিংয়ের আওতায় রাখতে হবে; পর্যাপ্ত পরিমাণের নিরাপত্তা কর্মী রাখতে হবে এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধের ওপর কঠোর জোর দিতে হবে; রাচির স্মরণে ক্যাম্পাসে স্থায়ী স্মৃতিফলক নির্মাণ করতে হবে এবং নির্মাণাধীন সেন্ট্রাল লাইব্রেরির একটি অংশের নাম রাচির নামে করতে হবে; কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী এবং  ৫৩ ব্যাচের কয়েকজনকে তদন্ত কমিটিতে পর্যবেক্ষক হিসেবে রাখতে হবে এবং সব দাবি মানা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে অবগত করতে হবে; আফসানা করিম রাচির বিদায়ী আত্মার মাগফিরাত কামনার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে দোয়া মাহফিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে;  রাস্তার মোরে সাইড মিরোরের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ফুটপাত নির্মাণ করতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আলী চিশতি বলেন, “আমাদের বোন রাচির মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আমরা ১১ দফা দাবি জানিয়েছি। কিন্তু ঘটনা ঘটার পর প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সামনে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন তুলে ধরতে পারে নাই। আমরা শুনেছি মামলা হয়েছে কিন্তু পুলিশ যে তদন্তকাজ শুরু করেছে এর কোনো প্রমাণ পাই নাই।”

আলী চিশতি বলেন, “আমরা জানি যে, সব দাবিগুলো এক দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমাদের সামনে দৃশ্যমান কিছু পদক্ষেপ তুলে ধরতে হবে। আর না হয় আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।“

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা সবার আগে চেষ্টা করছি অপরাধীকে শনাক্ত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছে। আর শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো খুবই যৌক্তিক, ইতোমধ্যে আমরা অটোরিকশা ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করেছি এবং বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়নেও কাজ করছি।”

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাবির ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় আফসানা করিম রাচি নিহত হয়েছেন। নতুন কলা ভবনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আফসানা করিম রাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী (৫৩ ব্যাচ) ছিলেন।

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!