শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হককে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল সিলেট সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে আলোচনায় এ দাবি জানান। আন্দোলন ও অনশন চলাকালে এমন দাবি উত্থাপন করেননি শিক্ষার্থীরা। গত ২৬ জানুয়ারি জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংকট সমাধানের আশ্বাস দেন ও তাদের অনশন ভাঙান।
শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
১. অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হককে শাবিপ্রবিতে এমিরেটাস অধ্যাপক করতে হবে।
২. দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাখাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বাড়ানো এবং সঠিক ব্যয় নিশ্চিতকরণ।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম চালু করা।
৪. শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পিএইচডিসহ ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মতামত যাচাই করা।
এই চারটি দাবির আগে প্রথম দাবিটি যে উপাচার্যের পদত্যাগ সেটা জোর দিয়ে বলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মো. ওমর ফারুক বলেন, “আমাদের প্রথম দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যার ও ইয়াসমিন হক ম্যামকে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। উনি উচ্চ মহলের সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের জানাবেন। এটি না মানলে আমরা আলোচনা করে বাকি সিদ্ধান্ত নেবো।”
এর আগে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার ফ্লাইটে ঢাকা থেকে সিলেটে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। প্রথমে সিলেটের সার্কিট হাউসে আসেন তিনি। পরে বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন এবং হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন।
এদিন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অনুবিভাগের সেক্রেটারিসহ তিন কর্মকর্তা। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন- মোহাইমিনুল বাশার রাজ, ইয়াসির সরকার, নাফিসা আনজুম, সাব্বির আহমেদ, আশিক হোসাইন মারুফ, সাবরিনা শাহরিন রশীদ, সুদীপ্ত ভাস্কর, শাহরিয়ার আবেদীন, আমেনা বেগম মীর রানা ও জাহেদুল ইসলাম অপূর্ব।
গত ১৩ জানুয়ারি শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েকশ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করা অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৩টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।
২৬ জানুয়ারি সকালে অনশনস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক। তারাই শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।