জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক নারী শিক্ষার্থীসহ দুইজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ১৫তম ব্যাচের চারুকলা বিভাগের উম্মে তহমিনা জেরিফ মিশু এবং অপর জন একই ব্যাচের ফিল্ম এন্ড টেলিভিশনের শিক্ষার্থী ছোলায়মান খান।
এ ঘটনায় বুধবার (১ নভেম্বর) ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে পৃথক দুটি অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন সাদেক খান, শুভ সাহা ও শরিফুল ইসলাম হিমু। তারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সাদেক হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টায় টিএসসির পেছনে ছোলায়মান ও তার বন্ধু মিশু চা শেষ করে কাপ দিতে যান। তখন সেখানে বসার টুল নিয়ে সাদেকের সঙ্গে মিশু ছোলায়মানের বাকবিতণ্ডা হয়। এ পর্যায়ে সাদেকের সঙ্গে যোগ দেন হিমু ও শুভসহ আরও ৪-৫ জন।
এ সময় মিশুকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, ‘তুই ছেলে হলে তোকে মাটিতে পিষে ফেলতাম।’ পরিস্থিতি খারাপ দেখে মিশু ও ছোলায়মান স্থান ত্যাগ করতে চাইলে হিমু ও শুভ মিশুকে মারতে উদ্যত হন। ছোলায়মান বাধা দিতে গেলে তার ওপর আক্রমণ করেন তারা। এ মিশু ও ছোলায়মান আহত হন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জেরিফ মিশু বলেন, “আমাকে সবাই মিলে মারতে এলে ছোলায়মান আমাকে বাঁচাতে যায়। তারা তার গায়ে হাত দেয় এবং ধাক্কাতে থাকে। আমি বাধা দিতে গেলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলার হুমকি দেয় এবং কিল, চড়, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। তারা আমাদের মারতে মারতে রাস্তায় নামিয়ে আনে। এমনকি পরবর্তী সময়ে আমার বন্ধুকে আরও মারধর করার হুমকি দেয়।”
আরেক ভুক্তভোগী ছোলায়মান খান বলেন, “সাদেকসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে মারধর করে এবং আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমরা প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”
এ ব্যাপারে কথা বলতে অভিযুক্ত সাদেক খান ও শুভ সাহাকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অপর অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম হিমু বলেন, “ওই মেয়ের সাথে আমার কোনো বাকবিতণ্ডা হয় নাই। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা। আমরা ফটোকপির দোকানে গিয়ে দেখি আমাদের ছোট ভাইদের সাথে কথা কাটাকাটি হচ্ছে, আমি গিয়ে জানতে চাইলে তর্ক হয়। ওই মেয়ে জুনিয়র হয়ে আমাদের ওপর কয়েকবার জুতা তুলেছে। গরম চা ছুড়ে মারছে। আমার কলার ধরছে তখন আমি সিনিয়র হিসেবে ওই ছেলেকে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে ওই মেয়েকে নিয়ে যেতে বলেছি।”
এ বিষয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, “এ ঘটনার বিষয়ে প্রক্টর অফিস থেকে আমাকে কিছু এখনও জাননো হয়নি। বিষয়টি কী হয়েছে তা দেখে জানাবো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, “একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবার অভিযোগ দিতে বলেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”