রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসের ভেতর ট্রাক চাপায় হিমেলের মৃত্যুতে প্রতিবাদী চিত্র ও শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হয়েছে। এতে দুর্ঘটনার দৃশ্যসহ হিমেলের নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়।
রাবি চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ প্রদর্শনী হয়। চার দিনব্যাপী আর্টক্যাম্প শেষে মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে ওই প্রতিবাদী চিত্রকর্ম প্রদর্শনী হয়। যেখানে ঘাতক ট্রাক হিমেলকে চাপা দেয়।
চিত্র ও শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে শিল্পীরা হিমেলকে নিয়ে নানা ধরনের সৃষ্টিশীল কাজ করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম মাটি দিয়ে তৈরি দেহে কাপড় জড়ানো হিমেলর প্রতীকী লাশ, হিমেলের হাস্যোজ্জ্বল চেহারার ছবি, যে ট্রাকে তিনি নিহত হয়েছেন তার নম্বরপ্লেট ইত্যাদি। হিমেলের নিজ হাতে গড়া শিল্পকর্মগুলোও এতে রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় শতাধিক চিত্র ও শিল্পকর্ম এতে স্থান পেয়েছে।
তার সহপাঠীরা বলছেন, এই শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর মাধ্যমে তাদের হাস্যোজ্জ্বল সহপাঠী হিমেলের স্মৃতি ও দুর্ঘটনার দৃশ্য ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করছেন তারা।
গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুন্নাহার তৃষা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নিরাপদ জায়গায় এইরকম একটা বাজে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হিমেলকে চলে যেতে হলো। যেটাকে আমরা দুর্ঘটনা বলা অপেক্ষা হত্যাকাণ্ড বলবো। প্রত্যক্ষভাবে হত্যাকাণ্ড না হলেও পরোক্ষভাবে এটি হত্যাকাণ্ড।”
চিত্রকর্ম প্রদর্শনী সম্পর্কে হিমেলের সহপাঠী আতিক ইমরান বলেন, “হিমেলের বন্ধু, ছোট ভাই ও বড় ভাইদের যৌথ উদ্যোগে এই প্রতিবাদী চিত্রকর্ম প্রদর্শনী করা হয়েছে। আর এই প্রদর্শনী ঘুরে দেখে যদি মানুষের মধ্যে কোনো অনুভূতি আসে, সেটাই আমাদের সার্থকতা। আমাদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিতভাবে প্রতিবাদ চলমান থাকবে।”
চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী রাহুল দেবনাথ বলেন, “হিমেলের ঘটনাটির প্রভাব সবার ওপরেই কমবেশি পড়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অনুভূতি প্রকাশের জন্যই এই শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। এতে সবার জন্য মেসেজ থাকবে সচেতন হওয়ার ব্যাপারে।”
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে নির্মাণাধীন বিজ্ঞান ভবনের সামনে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেল নিহত হন। হিমেল চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক্স ডিজাইন ক্রাফট ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।