চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রবেশ পথ জিরো পয়েন্টে চবি থানার জন্য নির্মিত হয়েছে ছয় তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন থানা ভবন। এক বছরের অধিক সময় আগে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখনো উদ্বোধন হয়নি এটি। ফাঁড়িটিতে এখনো থানা স্থানান্তর করা হয়নি। কাজ চলছে হাটহাজারী মডেল থানায়। ফলে এখনো পুলিশ শূন্য অবস্থায় রয়েছে এই ভবনটি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২১০০ একরের আয়তনে দেশের সর্ববৃহৎ এই ক্যাম্পাসে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর আনাগোনা। বিশাল ক্যাম্পাস হওয়ায় বর্তমানে ফাঁড়িতে থাকা অল্পসংখ্যক পুলিশ দিয়ে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সংঘর্ষে থানা থেকেই পুলিশ যেতে সময় লাগে। রিজার্ভ ফোর্স পৌঁছার আগেই ঘটনা বড় হয়ে যায়। তাই ২০১৪ সালেই আবাসিক সুবিধা সম্পন্ন ভবনটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়।
চট্টগ্রাম গণপূর্ত হাটহাজারী সার্কেল সূত্রে জানা যায়, ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনের জন্য মোট চার টেন্ডারে ৫ কোটি ৪ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রথম টেন্ডার হয় ৫ জানুয়ারি ২০১৫ সালে। ৯ মাস মেয়াদি ওই প্রকল্পে বরাদ্দ আসে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। পরের বছরের ১৬ নভেম্বর আরেক টেন্ডারে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম তলার জন্য বরাদ্দ আসে ১ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা। আবার ২০১৯ সালের ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি পৃথক দুই টেন্ডারে ৬ষ্ঠ তলা জন্য ৮৫ লক্ষ এবং রোড, রিটার্নিং ওয়ালের জন্য ৬৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আসে।
জানা যায়, চবি পুলিশের জন্য নির্মিত ভবন প্রকল্পটি চার টেন্ডারে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন ভবন বুঝিয়ে দেওয়ার পালা। গণপূর্ত বিভাগ যেকোনো সময় জেলা পুলিশকে ভবন বুঝিয়ে দিতে পারবে।
এদিকে ২০১৫ সালে চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার চবি থানাসহ মোট দশটি থানা বাড়ানোর প্রস্তাব সদর দপ্তরে পাঠিয়েছিলেন। পুলিশ সুপারের এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে ৯ থানার জন্য গণশুনানি হয়।
প্রস্তাবনা সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ এলাকাসহ আরে ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে মোট ৭৮ বর্গকিলোমিটার জুড়ে দায়িত্ব পালন করার কথা রয়েছে চবি থানার। ইউনিয়ন পরিষদগুলি হচ্ছে ফতেপুর, চিকনদন্ডি, দক্ষিণ মাদার্শা, শিকারপুর ও বুড়িশ্চর।
শিক্ষার্থীদের অভিমত, চবিতে থানাটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হবে, কমবে বহিরাগতদের উৎপাত।
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারবো না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবে কখন চবি থানার উদ্বোধন এবং কার্যক্রম শুরু হবে।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি।