জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) শিক্ষকদের অন্তঃকলহে পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও নিয়োগ হয়নি ছাত্র পরামর্শক ও উপদেষ্টা।
নিয়োগ আটকে থাকার জন্য শিক্ষকদের গ্রুপিং রাজনীতিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০০৬ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দুই বছরের জন্য কমপক্ষে সহযোগী অধ্যাপক পদের কাউকে পরিচালক পদে নিয়োগের নিয়ম রয়েছে। তবে ছাত্র পরামর্শক ও উপদেষ্টা পদে নিয়োগের ক্ষমতা উপাচার্যকে দিয়েছে সিন্ডিকেট।
গত ২৩ এপ্রিল ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে ২ বছর মেয়াদ শেষ করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ সুজন আলী। এর কিছু দিন আগে থেকেই ছাত্র উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেন বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু নীল দল ও শিক্ষক সমিতি থেকে একাধিক শিক্ষকের নাম পরামর্শক ও ছাত্র উপদেষ্টা প্রস্তাব করা হয়। ফলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অস্বস্তিতে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য। উপাচার্য বলেন সবাই এক হয়ে নাম প্রস্তাব দেওয়ার জন্য এবং সিদ্ধান্ত অবশ্যই সিন্ডিকেট মিটিং এ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শাহীন আলম বলেন, “শিক্ষকদের অন্তঃকলহ ভুলে এক হয়ে একজন যোগ্য লোককে নিয়োগ দেওয়া হোক। কেননা এই পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ।”
সাবেক ছাত্র পরামর্শক ড. শেখ সুজন আলী বলেন, “এমনিতেই পদটি গুরুত্বপূর্ণ। করোনাকালে তা আরও বেড়েছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত দায়িত্বশীল কাউকে নিয়োগ দেওয়া।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. হুমায়ূন কবীর বলেন, “ক্ষমতাবলে উপাচার্য নিয়োগ দিতে পারেন। কিন্তু ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কায় এটি সিন্ডিকেটের ওপর দিয়েছেন। আগামী সভায় এ নিয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।”
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “শিক্ষকরা রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। ছাত্র পরামর্শক পদে তারা পৃথকভাবে তিনজনের নাম দিয়েছেন। সবাই মিলে একটি নাম দিতে বলেছি আমি। গ্রুপিং বাদ দিয়ে একটি নাম দিক, আমরা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব।”
“শিক্ষকরা এক হতে পারেননি, আমার কাছে সবাই সমান, কাকে রেখে কাকে প্রাধান্য দেব! এজন্য আমি নিয়োগ দিচ্ছি না।”
দ্রুতই ছাত্র পরামর্শক নিয়োগের দাবি তুলে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, তিন মাস ধরে না ছাত্র পরামর্শক না থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যা ঝুলে আছে। নিয়োগ না দিয়ে ভোগান্তির সৃষ্টি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।