রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) আমার প্রাণের উৎস বলে মন্তব্য করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তিনি বলেন, “এখান থেকে যে শিক্ষা নিতে পেরেছি এবং সৃজনশীলতার চর্চা করে যেভাবে সাহিত্যের জায়গা তৈরি করতে পেরেছি, সেই সবটুকু টেনে আমি আমার এই ৭৫ বছরের জীবনে পৌঁছেছি। এখানে সাহিত্য এবং শিক্ষার নানা দিক থেকে আমি অনেক কিছু অর্জন করেছি।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী ও বাংলা একাডেমির বর্তমান সভাপতি সেলিনা হোসেন রাবির সাবাশ বাংলাদেশ চত্বরে ‘গুণীজন সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
রোববার (২০ মার্চ) বিকেলে রাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত প্রাক্তন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়। এতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য, একুশে ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ৪৩ জনকে সংবর্ধিত করা হয়।
এসময় সেলিনা হোসেন উচ্চ মাধ্যমিকে রাজশাহী সরকারী কলেজে পড়াকালে ছাত্রীদের জন্য আলাদা একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হলে সেখানে ভর্তি হওয়ার স্মৃতিচারণ করেন। তাঁর বাবার নিষেধ স্বত্ত্বেও তিনি বর্তমান রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজকে সমর্থন জানানোর জন্য নতুন কলেজের প্রথম ব্যাচেই ভর্তি হন।
পুরোনো স্মৃতি মনে করে সেলিনা হোসেন আরো বলেন, “এভাবে রাজশাহী আমার সবটুকু জায়গায় আছে, যা কিছু ধারণ করার মধ্য দিয়ে নিজেকে তৈরি করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আজকে এখানে উপস্থিত হতে পেরে মনে হচ্ছে আমার প্রাণের শক্তি আবার নতুন করে উজ্জীবিত করেছে এবং নতুনভাবে পাচ্ছি।”
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম ঠান্ডুর সভাপতিত্বে উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ৭০ বছরে ধরে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার এক সেন্টার অব এক্সেলেন্সে পরিণত করতে চাই।”
এ জন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনও দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা সে ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় গুণীজনদের সংবর্ধনা স্মারক প্রদান করেন উপাচার্য।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক ড. চৌধুরী মো. জাকারিয়া, অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল ইসলাম।
স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত যারা সংবর্ধনা পাচ্ছেন : শহিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা, শহিদ এএইচএম কামরুজ্জামান, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রফেসর জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, হাসান আজিজুল হক, যতীন সরকার, সেলিনা হোসেন, মহাদেব সাহা।
একুশে পদক প্রাপ্তরা হলেন : মমতাজ উদদীন আহমদ, জিয়া হায়দার, অধ্যাপক মুহম্মদ শামস-উল হক, অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা, অধ্যাপক মজিবর রহমান দেবদাস, কবি ওমর আলী, গোলাম আরিফ টিপু, হালিমা খাতুন, ডা. আ. আ. ম. মেসবাহুল হক (বাচ্চু ডাক্তার), ড. গোলাম মুরশিদ, এস. এম. আব্রাহাম লিংকন, ফরিদা পারভিন, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিয়া।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন : ড. মযহারুল ইসলাম, কবি আতাউর রহমান, বদরুদ্দীন উমর, আবদুল হাফিজ, কবি আবুবকর সিদ্দিক, অধ্যাপক আলী আনোয়ার, সুশান্ত মজুমদার, অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ, অধ্যাপক খোন্দকার সিরাজুল হক, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, জাকির তালুকদার, মাসুম রেজা, মামুন হুসাইন, অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, স্বরোচিষ সরকার, রতন সিদ্দিকী, ইমতিয়ার শামীম, আনজীর লিটন, রফিকুর রশীদ, আমিনুর রহমান সুলতান, মো. জাহাঙ্গীর আলম শাহ, অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন সেলিনা হোসেন, অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা, এস. এম. আব্রাহাম লিংকন, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, জাকির তালুকদার, মাসুম রেজা, অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, স্বরোচিষ সরকার, রতন সিদ্দিকী, ইমতিয়ার শামীম, আনজীর লিটন, রফিকুর রশীদ, আমিনুর রহমান সুলতান, মো. জাহাঙ্গীর আলম শাহ, অধ্যাপিকা হোসনে-আরা বেগম। বাকিদের স্বজন, পরিবার এবং প্রতিনিধিরা সংবর্ধনা গ্রহণ করেন।