জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মীরা। এতে ওই বিভাগের সাজেদুল ইসলাম সুকর্ণ, মাহমুদুল হাসান ও হাবিবুল্লাহ মেজবুল্লাহ আকাশ নামে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা চেয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন আহত শিক্ষার্থীরা।
ডায়রিতে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, “আমাদের ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপে এক মেয়ে শিক্ষার্থীকে নিয়ে আয়মান সাজিদ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করলে আমরা ব্যাচের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা হলো, অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মীর মুকিত, মনোবিজ্ঞান বিভাগের মুনজির, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের আসিফ, ইতিহাস বিভাগের সজিব, অর্থনীতি বিভাগের সোহান ও তমালসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জন।”
তারা গত ২৯ ডিসেম্বর দুপুর অনুমান ১টার সময় জবির শান্ত চত্বর ও মূল গেটের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ কিল-ঘুষি, লাথি মারিয়া বেদনাদায়ক ফুলা জখম করে। আমার অন্যান্য সহযোগীরা এগিয়ে আসলে উক্ত-বিবাদিরা আমাদের বিভিন্ন হুমকি ও ভয়-ভীতি দেয়।
বিভাগটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩ ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপে এক মেয়ে শিক্ষার্থী ও তার স্বামীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন সাজিদ। এসময় ব্যাচের সবাই সাজিদকে পরদিন বুধবার পরীক্ষা শেষে সবার সামনে ক্ষমা চাইতে বলেন। কিন্তু পরীক্ষা শেষে শান্ত চত্বরে সকল শিক্ষার্থী আসলে সাজিদ ও রাসেল জবি ছাত্রলীগের প্রথম বর্ষের জুনিয়র কর্মীদের নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। হামলার ঘটনায় প্রক্টর অফিসে তারা লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর হামলাকারী রাসেল, সাজিদ পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সুকর্ণ ও মাহমুদ মেসেঞ্জার গ্রুপে মারধর করার হুমকি দেয়। অভিযোগ করে প্রক্টর অফিস থেকে বের হওয়ার পর ছাত্রলীগের কর্মীরা আবার হামলা করে। এসময় মেয়ে শিক্ষার্থীরা ভয়ে চিৎকার করে ক্যাফেটেরিয়ার দিকে চলে যায়।
জিডির বিষয়ে অভিযুক্ত আয়মান সাজিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা এ অভিযোগ মানি না। এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
জিডির বিষয়ে সদরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নাহিদুল ইসলাম বলেন, “জিডির সকল কাগজপত্র পেয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দেখছি আমরা।”
জবির প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, “আমরা দুটি অভিযোগ ও জিডির একটি কপি পেয়েছি। ঘটনার ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা ব্যবস্থা নিব।”