• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

২৪ ঘণ্টায় আত্রাইয়ের পানি বেড়েছে ৭০ সেমি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২২, ০১:৫১ পিএম
২৪ ঘণ্টায় আত্রাইয়ের পানি বেড়েছে ৭০ সেমি

পাহাড়ি ঢলে আত্রাই নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। নওগাঁর মান্দা, আত্রাই, পত্নীতলা ও মহাদেবপুর উপজেলায় আত্রাইয়ের পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার (সেমি) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০ সেমি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেকোনো  মুহূর্তে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে এমন আশঙ্কার করছেন এলাকাবাসী।

এদিকে বেড়িবাঁধের পুরাতন তিনটি ভাঙন স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় ইতিমধ্যেই মান্দা উপজেলার শতাধিক পরিবারের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

এদিকে সদর ইউনিয়নে গোসাইপুর রাস্তা ভাঙার উপক্রম হলে ইউপি সদস্য সফিকুল ইসলামের (অবাক) উদ্যোগে আব্দুল খালেক, ওহাব হোসেন ও ইসরাফিল আলিসহ আরও স্থানীয় অনেকের স্বেচ্ছাশ্রমে এঁটেল মাটি ও বালু ভরাটের বস্তা দিয়ে বন্যার পানি প্রতিরোধ করেন। তবে বন্যার আতঙ্ক বিরাজ করছে নদীতীরের মানুষদের মধ্যে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে আত্রাই নদীর পানি একটু একটু করে বাড়ছে। এ অবস্থায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শুক্র ও শনিবার থেকে হু হু করে বাড়তে থাকে পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় আত্রাইয়ের পানি ৭০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় মান্দা উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের পারনুরুল্লাবাদ গ্রামের রহিমের বাড়ির পূর্বপাশে এবং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চকরামপুর ও কয়লাবাড়ি নামক স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও বেড়িবাঁধের এসব ভাঙনের স্থান আর মেরামত করা হয়নি। নদীর পানি বাড়লে অনায়াসে এসব ভাঙন স্থান দিয়ে হু হু করে পানি ভেতরে প্রবেশ করে। তলিয়ে যায় ক্ষেতের ফসল। পানিবন্দী হয়ে পড়েন পাঁচ শতাধিক পরিবার।

নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই বন্যা আতঙ্কে থাকেন নদীতীরের মানুষ। এ সময় তাদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। দিনরাত পাহারা বসিয়ে রক্ষা করতে হয় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ফসল ও বাড়িঘর রক্ষার জন্য স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করেন তারা।

মান্দা উপজেলার বনকুড়া গ্রামের বাসিন্দা আসাদ আলী বলেন, “আত্রাই নদীর ডান তীরের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। বাঁধের দুই ধারে বার্ম (তটভূমির সংযোগস্থলে উপকূলের সমান্তরালে সঞ্চিত হয় যে অনুচ্চ শিরার মতো ভূমিভাগ সৃষ্টি করে) নেই। সংস্কারের অভাবে বাঁধটি সংকুচিত হয়ে গেছে। এ অবস্থায় পানি বাড়তে শুরু করলে নদীতীরের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাঁধ রক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তাদের।”

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে আত্রাই নদীর পানি বাড়ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ঝুঁকির মুখে পড়বে কয়েকটি বেড়িবাঁধসহ দুই তীরের বন্যানিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধ। এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো মনিটরিংয়ের কাজ চলছে। বাঁধ রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত মালামাল মজুত রাখা হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান পাউবোর শীর্ষ এই কর্মকর্তা।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, “বন্যা মোকাবিলায় এরই মধ্যে সাত সদস্যের একটি তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া জরুরি মুহুর্তের জন্য বস্তাসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুত রাখার কাজ চলছে এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।”

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!