সোনারগাঁয়ে আসামিকে দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় খাদে পড়ে দুই উপপরিদর্শক (এসআই) নিহত হন। কৌশলে পালিয়ে যাওয়া আসামি আলমগীর হোসেনকে ৯ দিন পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে আলমগীরকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম।
২০ জানুয়ারি সেই আসামি পালানোর ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এতে সভাপতি করা হয়েছে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে। অন্য দুই সদস্য হলেন জেলা গোয়েন্দা শাখার খ-জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহরিয়ার হাসান ও নারায়ণগঞ্জ ডিএসবি শাখার ডিআইও-২ মো. হুমায়ুন কবির খান। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসে অনুসন্ধান করে সুস্পষ্ট মতামতসহ একটি বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কাছে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ১৭ জানুয়ারি গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে টেকনাফ থেকে ৫০ হাজার ইয়াবার একটি চালান আসছে। খবর পেয়ে সোনারগাঁয়ের মেঘনা টোলপ্লাজায় তল্লাশি চৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় আসামির গাড়িকে সিগন্যাল দিলে এক কনস্টেবলকে আহত করে দ্রুত সেটি পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের আরেকটি টিম মোগড়াপাড়া এলাকায় ধাওয়া করে আসামি আলমগীর হোসেনকে গাড়ি এবং ৪২ হাজার ইয়াবাসহ আটক করে। তাকে প্রথমে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আসামিই গাড়ি চালাচ্ছিল।
এসপি অফিসে সংবাদ সম্মেলনের পর আসামিকে নিয়ে থানায় রওনা দেন দুই এসআই ও এক এএসআই। তবে তাদের তিনজনের কেউই গাড়ি চালাতে পারেন না ফলে আসামিকে দিয়েই গাড়ি চালানো হয়। পরে উপজেলার দত্তপাড়া এলাকায় সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে পৌঁছালে কৌশলে লাফিয়ে পড়ে গাড়ি খাদে ফেলে দেন আলমগীর।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা দুই এসআইকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আরও এক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আহত হয়েছেন। আহত এএসআইকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে পাঠানো হয় ওই দিন।
নিহতরা হলেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার মুনসুরাবাদ গ্রামের কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে কাজী সালেহ আহম্মেদ ও গোপালগঞ্জের চরভাটপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এস এম শরীফুল ইসলাম। তারা সোনারগাঁ থানায় কর্তব্যরত ছিলেন।