• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

সিট না পেয়ে গাছতলায় ডায়রিয়া রোগী


রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২২, ০৫:৪৬ পিএম
সিট না পেয়ে গাছতলায় ডায়রিয়া রোগী

রাজবাড়ীতে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা। সর্বশেষ ৭২ ঘণ্টায় ৬৪ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে সদর হাসপাতালে। এদিকে হাসপাতালে সিট না পেয়ে গাছতলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগী।

সোমবার (১১ এপ্রিল) সকালে থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ২৩ জন রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোববার থেকে বাড়তে শুরু করেছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালের বেড সংখ্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ার কারণে হাসপাতালের মেঝে ও বাইরে গাছ তলায়ও চলছে চিকিৎসা। 

রাজবাড়ী আধুনিক সদর হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের মেঝেতে গাদাগাদি করে রয়েছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা। সিট না পেয়ে কয়েকজন রোগীকে দেখা যায় বাইরে গাছতলায় চিকিৎসা নিতে। এদিকে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে রোগীর স্বজনদের। 

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বাইরে হাসপাতালের ড্রেনের পাশে দেখা যায় স্যালাইন হাতে একটি পাটি বিছিয়ে শুয়ে আছেন রোকসানা বেগম (৪৫)। তার মেয়ে রাজিয়া আক্তার বলেন, “আমরা মা সকাল থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। পরে হাসপাতালে নিয়ে আসলে দেখি সিট নেই, ভেতরেও কোন জায়গা নেই। পরে বাইরে এখানে পাটি পিছিয়ে শুইয়ে রাখছি। পাশেই ড্রেন প্রচণ্ড গন্ধ বের হয়। এর মধ্যে কি কেউ ভালো থাকতে পারে?”

সদর উপজেলার ভবদিয়া থেকে নাজমা বেগম এসেছেন তার ৩ বছরের নাতনি সামিয়াকে নিয়ে। তিনি নাতনিকে বাইরে ফাঁকা জায়গায় পাটি বিছিয়ে শুইয়ে রেখে ওখানেই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, “এখানে কীভাবে থাকবো। এখানে প্রচণ্ড গন্ধ ও গরম। এর মাঝে থেকে তো আরও অসুস্থ হয়ে যাবে সবাই।”

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স আইনুর নাহার বলেন, “গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসা নিয়েছে ৫২ জন। আমাদের ১২ সিটের বেডে এখন ভর্তি আছে ২৩ জন। রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা আমাদের সাধ্য মতো চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।”

খাদ্যে ব্যাকটেরিয়ার কারণেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মো. আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, “খাবার আগে ও টয়লেটের পরে ভালোভাবে হাত ধোয়া ও পচা-বাসি খাবার থেকে বিরত থাকাই পারে এর থেকে রেহাই দিতে।”  

রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, “এখন প্রচণ্ড গরম। আর এখন রমজান মাস ইফতারের সময় খাবারে খুব সাবধান থাকতে হবে। এ সময় বেশি ভাজাপোড়া খাবার যেন আমরা না খাই। আর এই গরমে খাবার নষ্ট হয়ে যায়। আর এই নষ্ট খাবার ডায়রিয়ার একটা কারণ হতে পারে। এই সময় প্রচুর পরিষ্কার পানি ও স্যালাইন খেতে হবে।”

Link copied!