• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

সম্পদে এগিয়ে সাক্কু, মামলায় কায়সার, নগদ টাকা নেই রিফাতের


কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ২১, ২০২২, ০৮:৪০ এএম
সম্পদে এগিয়ে সাক্কু, মামলায় কায়সার, নগদ টাকা নেই রিফাতের

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জনের মধ্যে সম্পদে এগিয়ে রয়েছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া সদ্য সাবেক মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু। অন্যদিকে মামলায় এগিয়ে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের নগদ কোনো টাকা নেই। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে কামরুল আহসান বাবুল, নিজাম উদ্দিন কায়সার ও রাশেদুল ইসলামের গাড়ি নেই। প্রার্থীদের দাখিলকৃত হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

আরফানুল হক রিফাত

নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। তার জন্ম ১৯৫৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। তিনি বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত নন। ২০০১ সালের একটি হত্যা মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। তার আয়ের উৎস কৃষি খাত থেকে ১০ হাজার টাকা, বাড়ি-দোকান ভাড়া বাবদ তার বার্ষিক আয় ৫ লাখ টাকা। ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় ১৭ লাখ ১১ হাজার ৮০০ টাকা। তার ব্যাংকে কোনো নগদ টাকা নেই। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৬ লাখ ১২ হাজার ৪৯৫ টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ৩৩ হাজার ২০০ টাকা। নিজের নামে পোস্টাল ও বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র আছে ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৪৫৪ টাকার। যানবাহনের মধ্যে আছে একটি জিপগাড়ি, যার মূল্য ১ কোটি ২ লাখ টাকা। তার ও স্ত্রীর স্বর্ণ আছে ৫০ ভরি। প্রার্থী রিফাতের স্থাবর সম্পত্তির আছে- কোটবাড়ি এলাকার সালমানপুরে ১৭ শতক, স্ত্রীর নামে ৬ শতক জমি। ফেনীতে যৌথ মালিকানায় আছে একটি আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, যার মূল্য ৩০ লাখ টাকা। ঢাকায় তার ৪০ লাখ টাকার একটি ও কুমিল্লায় আছে ৩০ লাখ টাকার (কেনার সময়) একটি অ্যাপার্টমেন্ট।

মনিরুল হক সাক্কু

তিনি কুসিকের দুইবারের মেয়র। শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে দুদক ও আয়কর আইনের দুটি মামলা বিচারাধীন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অতীতে দায়েরকৃত হত্যাসহ ফৌজদারি ও অন্যান্য আইনে ১০টি মামলা থেকে অব্যাহতি/খালাস পেয়েছেন। তবে তার নিজের ও স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ। ২০১৭ সালে হলফনামায় সাক্কুর নিজ নামে নগদ ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ৩০৬ টাকা ছিল। এবার তা ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯২ টাকা। স্ত্রীর নামে ২০১৭ সালে ছিল ৫৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫২৩ টাকা, এবার আছে ৯৯ লাখ ১৩ হাজার ৮২১ টাকা। এ বছরের তথ্যে তার বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ও অন্যান্য খাতে আয় দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৮ হাজার টাকা। এ খাতে নির্ভরশীলদের কাছ থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৬৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৩৬ টাকা। ব্যবসা খাতে নির্ভরশীলদের আয় ২০ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। প্রার্থীর শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত রয়েছে ৩ লাখ ১ হাজার ৬৯৭ টাকা। তিনি মেয়র হিসেবে বার্ষিক সম্মানী ভাতা পেয়েছেন ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমা আছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৭ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে আছে ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৭৫৭ টাকা। বিভিন্ন কোম্পানিতে জমা আছে ২ লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্র ৫০ লাখ ও স্ত্রীর নামে আছে ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩৬৪ টাকা। যানবাহনের মধ্যে আছে একটি ল্যান্ডক্রুজার জিপ ও স্ত্রীর নামেও আছে একটি গাড়ি। নিজ ও স্ত্রীর নামে আছে ২০ তোলা স্বর্ণ। ইলেকট্রনিক ও আসবাবপত্রের মধ্যে আছে ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকার মালামাল। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজের নামে ২০ একর কৃষি জমি ও ১৪৬ শতকের একটি পুকুর, নাল জমি আছে ১০৪ শতক। স্ত্রীর নামে আছে ১ দশমিক ২৩ একর জমি। নিজের নামে রাজধানী ঢাকায় পৃথক ৫টি স্থানসহ কুমিল্লা নগরীর বজ্রপুর এলাকায় তার জমি আছে ৪১ শতক। স্ত্রীর নামে রাজধানীর বসুন্ধরায় আছে ৩ কাঠার প্লট। নিজের নামে ফ্ল্যাট আছে কুমিল্লা নগরীতে ২টি, স্ত্রীর নামে নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় একটি বহুতল ভবন ও রাজধানীর ধানমন্ডিতে দোকান রয়েছে। এছাড়া স্ত্রীর নামে নগরীর বজ্রপুর এলাকায় বহুতল ভবন, ঢাকায় ২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রার্থীর কোনো দায়-দেনা নেই।

মাসুদ পারভেজ খান ইমরান

তিনি প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আফজল খানের ছেলে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে ২০১৬ ও ২০১৯ সালের পৃথক ২টি মামলা বিচারাধীন। তিনি অতীতে ২টি ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার আদেশ হাইকোর্টে স্থগিত আছে। কৃষি খাত থেকে তার আয় ২০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অন্যান্য উৎস থেকে আয় ৮ হাজার ২০৫ টাকা। তার স্ত্রীর বার্ষিক আয় ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ টাকা আছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৪২ টাকা, ব্যাংকে নিজ নামে জমা আছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ২৫৮ টাকা। স্ত্রী নামে নগদ ও ব্যাংকে আছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যানবাহনের মধ্যে আছে নিজের নামে ৫২ লাখ টাকা দামের একটি জিপ, স্ত্রী নামে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের একটি প্রাইভেট কার আছে। নিজের ২৫ তোলা ও স্ত্রীর ৫০ তোলা স্বর্ণ আছে। নিজ ও স্ত্রীর নামে ইলেকট্রনিক ও অন্যান্য আসবাব আছে ৪ লাখ টাকার। নিজের নামে অন্যান্য ব্যবসায় মূলধন আছে ৫ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজের নামে নগরীর শাকতলা এলাকায় ৭৭ দশমিক ৬৬ শতক জমি আছে। লালমাই পাহাড়ে বাগান আছে ১ দশমিক ১২ একরের।

নিজাম উদ্দিন কায়সার

নগরীর মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা কায়সারের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিকম। তিনি সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন ফৌজদারি মামলা রয়েছে ৮টি। খালাস পেয়েছেন ৪টি মামলা থেকে। দ্রুতবিচার আইনের একটি মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। বার্ষিক আয়ের উৎস দেখানো হয়েছে, চাকরি থেকে ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, অন্যান্য উৎস থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৪ হাজার ৬২৭ টাকা। তার নগদ টাকা আছে ৩৮ লাখ ৭২ হাজার ৯৩৫ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ৩ লাখ ২ হাজার ৪৯৭ টাকা। বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পারি থেকে আয় ৪০ হাজার টাকা। স্বামী-স্ত্রী স্বর্ণ আছে ৫০ তোলা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী আছে ১ লাখ ৯ হাজার ও স্ত্রীর নামে ইলেকট্রনিক ও আসবাব আছে ৭ লাখ টাকার।

রাশেদুল ইসলাম

তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী। তিনি নগরীর আসাদনগর এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা আবদুল লতিফ ও মা রেজিয়া খাতুন। তার জন্ম ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। নগদ টাকা আছে ৫০ হাজার। ব্যাংকে আছে ২ লাখ ৪২৮ টাকা। অকৃষি জমি আছে ৮ দশমিক ২৫ শতক।

কামরুল আহসান বাবুল

তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা আছে। ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নগদ টাকা আছে ৩ লাখ ৫০ হাজার। ব্যাংকে আছে ৫ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র আছে ৪০ হাজার টাকার। অস্থাবর সম্পদ আছে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকার। ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার অকৃষি জমি আছে। ১ দশমিক ৭৫ শতক জমির মধ্যে একটি নির্মাণাধীন ভবন আছে। 

Link copied!