পবিত্র ঈদুল আজহাকে ঘিরে অন্যান্য বছর কুমিল্লার কামারপল্লীতে তুমুল ব্যস্ততা চোখে পড়লেও এবার দৃশ্যপট কিছুটা বদলে গেছে। নেই কাজের চাপ, নেই ক্রেতার সমাগমও। তাই হতাশ এখন এ পেশায় জড়িত লোকজন। ঈদ আসতে আর মাত্র এক দিন বাকি থাকলেও অবসর সময় কাটছে তাদের। কুমিল্লার চকবাজার কামারপল্লী ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
কুমিল্লার চকবাজারে ৩০টিরও অধিক দোকান নিয়ে গড়ে উঠেছে কামারপল্লী। সারা বছরই কুমিল্লা শহর ও এর আশপাশের এলাকার মানুষজন ছুরি, বটি, দা ও টাক্কল কিনতে কিংবা শান দিতে এখানে ভিড় জমান। তবে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে কামারপল্লীতে ক্রেতাদের ভিড় তেমন একটা চোখে পড়েনি। অল্প কয়েকজন ক্রেতা আসছেন, তাদের কেউ কেউ ছুরি-বটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে এসেছেন পুরনো দা ছুরি শান দেওয়ার জন্য।
কামার পাড়ায় ছুরি, বটি কিনতে আসা লোকজন জানান, আগের তুলনায় দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। অন্যদিকে বিক্রেতারা জানান, ছুরি চাকু-টাক্কল-বটি-দা তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে এসব পণ্যের দাম। আগে এক বস্তা কয়লার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা থাকলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০০ টাকায়। এছাড়াও লোহার দামও বেড়েছে কয়েকগুণ।
কামারপল্লীর প্রবীণ ব্যবসায়ী বলাই কর্মকার বলেন, “বাজারে লোকজনের সমাগম একেবারেই কম। তাই বেচা-বিক্রিও কম। অন্যান্য সময়ে যে পরিমাণ বিক্রি হতো, ঈদের আগে যেন তা আরও কমে গেছে। একেবারেই কাজ নেই, তার বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে।”
আরেক দোকানি লিটন কর্মকার বলেন, “সবকিছুরই দাম বেড়েছে। দা-ছুরি বানাতে যে লোহা-কয়লা লাগে তার দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ফলে আমাদেরকেও দা ছুরি বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে যে ছুরি ৭০ টাকায় বেচতাম, তা এখন ১০০ টাকা। ৪০০ টাকার টাক্কল এখন বেড়ে ৬৫০ টাকা হয়ে গেছে। ফলে অনেক ক্রেতা এসে ফিরে যাচ্ছেন। তারপর বেচা-কেনা মোটামুটি ভালো হচ্ছে। তবে যতটা আশা করেছিলাম, সেরকম হচ্ছে না।”
কুমিল্লার বিবির বাজার এলাকা থেকে কোরবানির গরুর হাড্ডি কাটতে টাক্কল বানাতে এসেছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আবদুল অদুদ। তিনি বলেন, “টাক্কল কিনতে এসেছিলাম। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম বানিয়ে নিয়ে যাই, পণ্যটা মজবুত পাওয়া যাবে।“ দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে আবদুল অদুদ বলেন, “সবকিছুরই দাম বেড়েছে। ছুরি-কাচির দাম বাড়ছে এটাই স্বাভাবিক।”