মিয়ানমারের নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেওয়া এবং অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে থাকা রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
বুধবার (২৪ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পাঁচ বছর আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বর্বর অভিযান চালায়। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, ধর্ষণ, নির্যাতন এবং ব্যাপক মাত্রায় সহিংসতা চালিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করা হয়। ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় এবং বাংলাদেশে আশ্রয় চায়।
গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে তিনি বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে নৃশংসতা চালিয়েছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল এবং যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছে। এটার স্বীকৃতিও সেদিন দিয়েছিলেন তিনি।
অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্মিলিত মানবিক সহায়তার অত্যাবশ্যক পদক্ষেপ হিসেবে আমরা বাংলাদেশসহ ওই অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে কাজ করছি। যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের জীবনকে নতুনভাবে গড়তে পারে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা নিজ ভূমিতে নিরাপদে ফিরে যেতে পারবে না। রাখাইনের সহিংসতায় জীবন নিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে ও অঞ্চলের অন্যান্য স্থানসহ মিয়ানমারের থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে ১৭০ কোটি ডলার মানবিক সহযোগিতা দিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের প্রতি মার্কিন সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের ও বার্মার (মিয়ানমার) জনগণকে তাদের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের জন্য প্রচেষ্টা, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি এবং বার্মার সব ব্যক্তির মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদা রক্ষায় সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’
রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যার বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার প্রতিও সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ব্লিঙ্কেন বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ও বার্মার জনগণের জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে এবং নির্যাতিত ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে। জেনোসাইড কনভেনশনের অধীনে যে মামলাটি গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বার্মার বিরুদ্ধে এনেছে এবং বার্মিজ সামরিক বাহিনীর নৃশংসতা অপরাধের বিচারের জন্য বিশ্বজুড়ে আস্থাভাজন যেসব আদালতের বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে তাদের স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানানো আমরা অব্যাহত রাখছি।”