সাতক্ষীরায় সম্পূর্ণ অর্গানিক ও আধুনিক মালচিং পেপার পদ্ধতিতে উন্নত বুলেট জাতের রকমেলন চাষ করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন তালা উপজেলার নগর ঘাটা গ্রামের কৃষক হান্নান মোড়ল। তিনি জানান, এ বছর প্রথমবারের মতো নিজের ২০ শতাংশ জমিতে বুলেট জাতের রকমেলন চাষ করেছেন। যেখানে খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ফলন পাবেন প্রায় ২ হাজার ৫০০ কেজি । প্রতি কেজির দাম ৭০ থেকে ৭৫ টাকা করে ১ লাখ ৮০ টাকা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন তিনি।
হান্নান আরও জানান, ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখে এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি ইউনিটের আওতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি রকমেলন চাষ করেছেন। উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি ইউনিট এই চাষে বিভিন্ন উপকরণ, যেমন : বীজ, মালচিং পেপার, জৈব সার ক্রয়ে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা করেছেন।
উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি অফিসার মো. নয়ন হোসেন বলেন, “রকমেলন একটি বাঙ্গি জাতীয় ফসল। এটি ২ থেকে ৩ কেজি ওজন হয়ে থাকে। এই ফসল চারা লাগানোর প্রায় ৫৫-৬০ দিন বয়সে উত্তোলন করা যায়। কৃষক হান্নান মোড়লের রকমেলন চাষ ওই এলাকার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। ভবিষ্যতে অনেক কৃষক রকমেলন চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।”
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, “রকমেলন একটি লাভজনক ফসল। এ জেলায় ফলটি প্রথম চাষাবাদ হয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি রকমেলন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত রমজান মাসে ১২০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ধীর ধীরে অন্য কৃষকরা রকমেলন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।”
জানা গেছে, রকমেলন মাস্কমেলন গোত্রের একটি উচ্চমূল্যের বিদেশি ফল। ফলের ওপরের ত্বক পাথর (রক) এর মতো। তাই এটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত।
পুষ্টিগুণে রকমেলন অনন্য। বিভিন্ন এন্টি-অক্সিডেন্ট সম্পন্ন এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং সি, যা উচ্চ রক্তচাপ, অ্যাজমা কমিয়ে দেয়। এতে থাকা বেটা ক্যারোটিন ক্যান্সার রোধ করে। এছাড়াও ফলটি খুব রসালো। এর ৯০% পানি, যা হাইড্রেশন বজায় রাখে ও হজমে সহায়তা করে। চুল ও ত্বকের জন্য এই ফল খুব উপকারি।