• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রংপুরে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন


রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২২, ১০:৩৯ এএম
রংপুরে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন

আগে থেকেই বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড় আছে। তার ওপর নতুন করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজিসহ প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। যে কারণে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

শনিবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে রংপুর নগরীর সিটি বাজার, লালবাগ বাজার, ধাপ বাজারসহ আশ-পাশের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, রংপুরে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে সব ধরনের সবজির। সমান তালে বেড়েছে ডিমসহ মুরগির দামও। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রসুন ও পেঁয়াজের দাম। ক্রেতারা হতাশা আর ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তেলের দাম বৃদ্ধিতে সবজি উৎপাদনে সেচ খরচ আর পরিবহনে বাড়তি খরচের কারণেই দাম বাড়ার কথা জানান ব্যবসায়ীরা।

বাজারগুলোতে দেখা যায়, প্রত্যেকটি সবজির দাম খুচরা বাজারে গত এক সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহের থেকে ১০-১৫ টাকা বেশি। প্রতিকেজি শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তারে চেয়ে ২০ টাকা বেশি। এছাড়াও টমেটো ২০-৩০ টাকা বেড়ে ১৫০-১৬০ টাকা, গাজর ১০-২০ টাকা বেড়ে ১৭০-১৮০ টাকা। বাজারে কাচা মরিচ কিছুটা কমে ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া সবধরনের শাক ১০-২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। দেশি আদার দাম কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৩০-১৪০ টাকা, এলসি রসুনের ১০-২০ টাকা বেড়ে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির ডিমের হালি ৪-৬ টাকা বেড়ে ৪৪-৪৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকা এবং এলসি পেঁয়াজ আগের দামে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দাম বেড়েছে মুরগীরও। গত সপ্তাহের চেয়ে এক লাফে  ব্রয়লার মুরগি ৫০-৬০ টাকা কেজিতে বেড়ে হয়েছে ২০০-২১০ টাকা। আর পাকিস্তানি মুরগি ২০-৩০ টাকা বেড়ে ২৮০-২৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ সময় গত সপ্তাহের মতো দাম অপরিবর্তিত থেকে গরুর মাংস ৬৫০-৬৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০-৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

কথা হয় সিটি বাজারে বাজার করতে আসা শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। আগের চেয়ে পরিমাণে অর্ধেক বাজার করে হতাশা নিয়ে শহিদুল বলেন, “হঠাৎ যেভাবে বাজারে তরকারিসহ সবকিছুর দাম বাড়ছে সে তুলনায় আয় না বাড়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে।”

এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ধাপে ধাপে দাম বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর। কিন্তু আমরা যারা মধ্যবিত্ত, তাদের আয় বাড়েনি বিন্দু পরিমাণ। একহাজার টাকার একটা নোট আধা কেজি এক কেজি করে প্রয়োজনীয় কয়েকটা সবজি কিনতে শেষ হয়ে গেলো মাছ-মাংস কেনা তো দূরের কথা।”

অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবদুল হক বলেন, “ঘনঘন সবকিছুর দাম বাড়ায় মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে, সাশ্রয়ী দামে ব্রয়লার কিনতে যেয়ে চমকে গেছি। সাত আটদিন আগেও এই মুরগির দাম ছিলো ১৪০-১৫০ টাকা কেজি। সেটি আজ বাধ্য হয়ে কিনতে হলো ২০০ টাকা কেজিতে। নিরুপায় হয়ে পরিমাণে একটু কম নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।”

সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, এবারের মৌসুমে কৃষকের ক্ষেতে সবজি অনেক কম। তাছাড়া গত সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে অনেক সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তাই পাইকারি কিনতেই বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। যার ফলে একটু বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।

সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য বাবু জানান, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বেড়েছে অনেক বেশি।‌ যে কারণে কয়েকদিন থেকে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও অনেক কমেছে বলে জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।

Link copied!