ঈদের ছুটিতে লক্ষ্মীপুরে ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা বন্ধ করে যায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ সুযোগে টয়লেটের ভেন্টিলেটর ভেঙে ওই শাখার ভেতরে ঢুকে একদল ডাকাত। ব্যাংকের ভল্টের তালা সুকৌশলে খুলে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৫০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এখানেই থেমে যায়নি ডাকাতরা, ডাকাত দলের পরিচয় দেওয়ার কথা বলে ওই শাখার মালিককে ফোন করে আরও ২০ লাখ টাকা দাবিও করে ডাকাত দল। এমন ঘটনার অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের চার সদস্যকে আটক করেছে লক্ষ্মীপুর র্যাব-১১। এ সময় উদ্ধার করা হয় টাকাসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম।
শনিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে র্যাব-১১ লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১-এর লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শামীম হোসেন। এর আগে গত ১৯ জুলাই লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাইশমারা ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকার সুযোগে ব্যাংক ডাকাতি করে ডাকাত দলের সদস্যরা।
আটক ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের মো. মাঈন উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরপে বাবু (২২), মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মো. মাঈন উদ্দিন (৫৮), নুর হোসেনের ছেলে রিয়াজ (২৪), সদর উপজেলার লাহারকান্দি গ্রামের তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বাড়ির মৃত আবদুর নুর ভূঁইয়ার ছেলে মো. রাসেল হোসেন (৩১)।
র্যাব-১১-এর কোম্পানি কমান্ডার জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে শনিবার গভীর রাতে উত্তর তেমুহনী এলাকা থেকে ডাকাত দলের সদস্য রাসেলকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভোররাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডস্থ আলার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ডাকাতির মূল হোতা আনোয়ার হোসেন বাবু ও তার বাবা মাঈন উদ্দিনকে আটক করা হয়। একপর্যায়ে তাদের ঘর তল্লাশি করে নগদ ১৩ হাজার টাকাসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ১টি হাতুড়ি, হেস্ক ব্লেট, স্ক্রু ড্রাইভার, কিরিচ, চাপাতি, চুরি ও প্রতারণার মাধ্যমে চাঁদা আদায়ের কাজে ব্যবহৃত দুটি সিমসহ একটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। পরে আনোয়ার ও তার বাবা মাঈন উদ্দিনের স্বীকারোক্তি মতো একই বাড়ি থেকে অপর ডাকাত সদস্য রিয়াজকে আটক করে র্যাব।
আটকদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, লক্ষ্মীপুরের বাইশ মারা ইসলামী ব্যাংকের এজেন্টে ব্যাংকিং শাখার প্রোপ্রাইটর রেজাউল করিম। ঈদের ছুটিতে শাখাটির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গত ১৯ জুলাই রাত ১০টার দিকে আটককৃত আসামিরা ও অপর ডাকাত দলের সদস্যরা সমন্বয় করে শাখাটির দক্ষিণ পাশে টয়লেটের ভেন্টিলেটর ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে সিন্দুক খুলে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৫০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ০১৮৭৮৮৫২৯০২ নাম্বার থেকে ফোনে ডাকাতদের পরিচয় দেওয়ার কথা বলে শাখাটির মালিকের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া অপর ডাকাত দলের সদস্যদের আটক ও টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।