বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কোটি টাকা গেল কোথায়?


নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১, ০১:৫৭ পিএম
বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কোটি টাকা গেল কোথায়?

নাটোরে দুই হাজার নয়জন বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীর মাসিক ভাতার প্রায় কোটি টাকা ভুয়া বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গায়েব হয়ে গেছে। দুই হাজার নয়জনের ভাতার পরিমাণ বছরে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। কোথায় গেল সেই টাকা, তার কোনো সঠিক তথ্য নেই। এ নিয়ে নাটোর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের স্থানীয় কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বিকাশ এজেন্ট একে অন্যকে দুষছেন।

বঞ্চিত এসব ভাতাভোগী নারী-পুরুষ বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা না পেয়ে প্রতিনিয়তই ঘুরছেন জেলা সমাজসেবা অফিসে।

নাটোর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, “গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে পেয়েছে। অনেকে ৯ মাসের আবার কেউ কেউ ছয় মাসের ভাতার টাকা পায়নি।”

নাটোর জেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, নাটোরে ছয় উপজেলায় ২০০৯ জন বঞ্চিত নারী-পুরুষ রয়েছেন। যার মধ্যে নাটোর সদর উপজেলায় ৩৩০ জন, লালপুরে ৮০১ জন, নলডাঙ্গায় ৫৬৩ জন, বাগাতিপাড়ায় ১৭৭ জন, গুরুদাসপুরে ৮০ জন এবং বড়াইগ্রামে ৫৮ জন। এর মধ্যে বয়স্ক ভাতা ১১ হাজার ৭৬ জন, বিধবা ভাতা ৩৬৮ জন ও প্রতিবন্ধী ভাতা ৪৬৫ জন ভাতাভোগী রয়েছেন।

নাটোর শহরের কান্দিভিটুয়া এলাকার রত্না বেওয়া বলেন, “ব্যাংকে নিয়মিত বয়স্ক ভাতার টাকা পেতাম। মোবাইলে বিকাশ খোলার পর থেকে আর টাকা পাই না। এই টাকাই আমার একমাত্র ভরসা।”

বিকাশ এজেন্ট মিজানুর রহমান জানান, সমাজসেবা কার্যালয় তাদের যে নম্বর দিয়েছে, তারা সেই বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠিয়েছি মাত্র। সম্পূর্ণ নম্বর ভুল অথবা ডিজিট ভুলের দায় স্থানীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের লোকজনের। এখানে তাদের কোনো ভুল নেই।

বিধবা ও স্বামী নিগৃহের শিকার নারী ভাতা প্রকল্পের উপপরিচালক দেবব্রত দাস বলেন, যেসব ভুয়া মোবাইল অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গেছে সেগুলো শনাক্ত করার জন্য আমরা ইতোমধ্যে বিটিসিএলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর এসব প্রতারকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শামীম আহমেদ বলেন, নাটোরের দুই হাজার নয়জন অসহায় ভাতাভোগী যে ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তা পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। যারা এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Link copied!