• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাবনায় শিম চাষে বিপর্যয়, ক্ষতির মুখে কৃষক


আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, পাবনা
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ০৮:৩১ এএম
পাবনায় শিম চাষে বিপর্যয়, ক্ষতির মুখে কৃষক

শিমসাগর হিসেবে খ্যাত পাবনা জেলার ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া ও পাবনা সদর উপজেলার ৪০টি গ্রামে প্রায় ৪ হাজার কৃষক শিম চাষ করে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন এনেছেন। কিন্তু এবার বিরূপ আবহাওয়ায় শিমের ফলনে ব্যাপকভাবে বিপর্যয় ঘটেছে। এতে আগাম শিমচাষিদের মুখে হাসির কোনো ছাপ নেই। তাদের গুনতে হচ্ছে লোকসান।

পাবনা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে পাবনা সদর, আটঘরিয়া ও ঈশ্বরদী উপজেলাতে সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদ হয়। এ এলাকায় রয়েছে পেঁয়াজ ময়েজ, পেঁপে বাদশা, গাজর জাহিদের মতো নানা খেতাবপ্রাপ্ত আদর্শ কৃষক। এসব খেতাবপ্রাপ্ত কৃষকের অনুপ্রেরণায় এ এলাকার কৃষকেরা আগাম সবজি চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। এভাবেই তারা পরপর কয়েক বছর শিম চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছেন। এ বছর পাবনায় ৩২০০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। শিম চাষে সময় ও খরচ খুবই কম এবং সার কীটনাশক তেমন না লাগায় এ অঞ্চলের কৃষকরা অন্য যেকোনো আবাদের চেয়ে শিম আবাদে বেশি আগ্রহী।

জানা যায়, এ বছর আটঘরিয়ার নছিরামপুর, রামেশ্বরপুর, কাঁকমারি, কচুয়ারামপুর, দুর্গাপুর, রোকনপুর, পারখিদিরপুর, নাদুড়িয়া, সড়াবাড়িয়া, কালামনগর, সোনাকান্দর, খিদিরপুর, চাঁদভা, সঞ্জয়পুর, বাচামারা, রতিপুর, হাপানিয়া, বেরুয়ান, কুমারেশ্বর, লক্ষ্মণপুরসহ আশপাশের গ্রামগুলোর শত শত বিঘা জমিতে আবাদ হচ্ছে শিমের। যেদিকে তাকানো যায় শুধু শিমের আবাদ। তাই এ এলাকার নাম দেওয়া হয়েছে শিমসমুদ্র।

কয়েক বছরে শিমের ফলন ও বাজার ভালো থাকায় কৃষকরা বেশ লাভবান হয়েছেন। এবার চরম খরা আবার কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে শিমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে কুঁড়ি ফুল ঝরে যাচ্ছে এবং ব্যাপক বৃষ্টির কারণে গাছের গোড়া পচে যাচ্ছে। কোনো কীটনাশক বিষ দিয়েও লাভ হচ্ছে না। পাইকারি বাজারে শিম ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা।

শিমচাষি আনোয়ার হোসেন খান, আলাল উদ্দিন, শাহাদত আলী, ইশারত খান, দুলাল খানসহ বেশ কয়েকজন চাষির সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, ১ বিঘা জমিতে শিম আবাদে খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। বিক্রি হয় প্রায় ১ লাখ টাকার মতো। কিন্তু এবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় শিমের ফলন হচ্ছে না। গত বছর যে জমিতে সপ্তাহে দুইবার দেড় মণ করে শিম তুলত, সেই জমিতে এখন শিম তুলছেন ২৫ কেজি থেকে ২৬ কেজি। সার-কীটনাশকের যে দাম তাতে খরচ ওঠানোই কঠিন হয়ে যাবে।

চাঁদভা ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম কামাল জানান, বিরূপ আবহাওয়া ও ফলন বিপর্যয়ের কারণে শিমচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। তাই এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে একটু সরকারি সহযোগিতা হলে ভালো হয়।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ির উপপরিচালক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, “স্বল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় পাবনার কৃষকেরা শিম চাষের প্রতি বেশি ঝুঁকেছেন। এবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় একটু ফলন কমেছে। তবে শিমের বাজারদর ভালো পাচ্ছেন। বাজারদর ভালো থাকলে তারা লাভবান হবেন।”

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!