• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
ঈদযাত্রা

দৌলতদিয়ায় গাড়ির অপেক্ষায় ফেরি


রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২২, ০১:১৫ পিএম
দৌলতদিয়ায় গাড়ির অপেক্ষায় ফেরি

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম নৌপথ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে নেই যানজট। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বদলে গেছে ঘাটের চেহারা। যেসব গাড়ি ফেরি পারের জন্য আসছে, তারা সরাসরি ফেরিতে উঠে পাটুরিয়া যেতে পারছে। একসময় যে ঘাটে ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো গাড়িগুলোকে, এখন সেই ঘাটে গাড়ির অপেক্ষায় থাকে ফেরি।

এ রকম সুনসান ফাঁকা পরিবেশ দৌলতদিয়ার মানুষের কাছে একেবারেই অচেনা। এই পরিবেশ জেলার সংবাদমাধ্যম কর্মীদের কাছেও অচেনা। তারা কখনোই এ রকম শান্ত পরিবেশ এবং যানজটবিহীন ঘাট কখনোই দেখেনি, তা-ও আবার ঈদের পূর্বমুহূর্তে।

দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন বলেন, “গত রোজার ঈদেও ঘাটে যানবাহনের লাইন ছিল। একটা গাড়িকে প্রায় ১০-১২ ঘণ্টা ঘাটে বসে থাকতে হতো। আর কোরবানির ঈদের আগে তো ঈদের ১০-১৫ দিন আগে থেকে গরুর গাড়ি ঢোকা শুরু হতো। গরুর গাড়ি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে পার হলেও একটা লম্বা যানজট থাকত।”

আরেক ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, “দৌলতদিয়ার এ রকম চেহারা আগে দেখি নাই। কোরবানির ঈদের আগে ঘাটে লম্বা যানজট থাকত। এইবার দৃশ্যই আলাদা। ঈদের বাকি মাত্র আর কয়েক দিন। কিন্তু ঘাটে কোনো গাড়ি নাই।”

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী শফিকুল ইসলাম শামীম বলেন, “ঈদ এলেই আমাদের ব্যস্ততা থাকত তুঙ্গে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের প্রায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজট থাকত। সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও থাকত চরমে। তবে এবারে যানজট যেমন নেই। মানুষের ভোগান্তিও নেই। লঞ্চঘাটে নেই যাত্রী চাপ। এ এক অচেনা রূপ দৌলতদিয়ার।”

ঘাট ফাঁকা থাকার খুশিতে যাত্রী ও চালকরা। রাজবাড়ী থেকে আসা সপ্তবর্ণা পরিবহনের যাত্রী মেহেদী হাসান নয়ন। তিনি জানান, এত বছর এই ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো। তীব্র শীত কিংবা গরমে কষ্ট পেতে হতো। ঘাটে এসে সরাসরি ফেরিতে উঠতে পেরে ভালো লাগছে।

একই বাসের চালক মিন্টু মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “এই ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার জ্যাম থাকত। গাড়িতে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে থাকতে ঝিমুনি চলে আসত। এখন ঘাট পুরা ফাঁকা। এসেই ফেরিতে উঠতে পারছি। আগে ফেরির জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হতো। এখন ফেরি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে।”

গোল্ডেন লাইনের যাত্রী টুম্পা বলেন, “ঘাটে এসে যানজটে বসে আমারা ঠিক সময়ে ঢাকা পৌঁছাতে পারতাম না। কিন্তু এখন ঘাটে এসে যানজট নেই। সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারছি। এটা ভালো লাগছে।”

গরুবাহী ট্রাকের চালক মনসুর বলেন, “বিগত বছরগুলোতে কয়েক ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকত হতো। এ বছর কোনো ঝামেলা নেই, সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারছি।”

বিআইডাব্লিউটিসি ঘাট সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ২৪ ঘণ্টায় ৮ হাজার ৪০০ গাড়ি পারাপারের সক্ষমতা রয়েছে। তবে সেই সক্ষমতার তুলনায় ঘাটে গাড়ি আসছে ৫০ শতাংশের কম। তাই কোনো যানজট নেই।

বিআইডাব্লিউটিসি দৌলতদিয়া শাখার ব্যবস্থাপক মো. শিহাবউদ্দিন জানান, এই মুহূর্তে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট বড় মিলিয়ে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। যদি গাড়ির চাপ বাড়ে তাহলেও কোনোরকম যানজটের শঙ্কা নেই।

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!