শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতীতে বিপন্ন বন্যপ্রাণী তক্ষকসহ পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (১৪ মে) বিকেলে উপজেলার ঘাগড়া তেঁতুলতলা বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে র্যাব-১৪ এ তথ্য নিশ্চিত করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন ঢাকার মগবাজারের নয়াটোলা এলাকার আশরাফুল করিমের ছেলে মোহাম্মদ সিরাজুল করিম ও শেরপুর সদরের মির্জাপুর কান্দিপাড়া এলাকার শাহ মাহমুদের ছেলে মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিকউজ্জামানের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল হাতিবান্ধা ইউনিয়নের ঘাগড়া তেঁতুলতলা বাজারের সূচনা হার্ডওয়ার এন্ড ভ্যারাইটিজ স্টোরের সামনে চেকপোস্ট বসায়। এ সময় একটি তক্ষক পাচারকালে ওই দুই ব্যক্তিকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
আশিকউজ্জামান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে শেরপুর জেলার বিভিন্নস্থানে বন্যপ্রাণী তক্ষক ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহ করে আসছিল এই চক্রটি। তাদের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় একটি মামলা করেছে।”
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, “তক্ষক গিরগিটি প্রজাতির নির্বিষ নিরীহ বন্যপ্রাণী। সাধারণত পুরনো বাড়ির ইটের দেওয়াল, ফাঁক-ফোকড় ও বয়স্ক গাছে এরা বাস করে। কীটপতঙ্গ, টিকটিকি, ছোট পাখি ও ছোট সাপের বাচ্চা খেয়ে এরা জীবন ধারণ করে। আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকা অনুযায়ী এটি বিপন্ন বন্যপ্রাণী।”
জোহরা মিলা আরও বলেন, “তক্ষকের দাম ও তক্ষক দিয়ে তৈরি ওষুধ নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হয়েছে। আর গুজবে বিশ্বাস করে এক শ্রেণির লোক রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্নে তক্ষক শিকারে নেমেছে। তক্ষক দ্বারা তৈরি বিভিন্ন ওষুধের উপকারিতা নিয়ে যা শোনা যায়, বৈজ্ঞানিকভাবে তার কোনো ভিত্তি নেই। তারপরও এই গুজবটির কারণেই প্রাণীটি হারিয়ে যেতে বসেছে।”