• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

টানা লকডাউনে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২১, ০৭:২৮ পিএম
টানা লকডাউনে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

টানা লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন ফরিদপুরের খেটে খাওয়া দিনমুজুর, অসহায় হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। একদিকে রয়েছে দেশজুড়ে টানা লকডাউন অপর দিকে করোনা মহামারির আতঙ্ক। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা।

ভূমিহীন এক ক্ষুদ্র ফুটপাত ব্যবসায়ী কুদ্দুস মিয়া জানান, আজ অনেকদিন হলো রাস্তায় বসতে পারছেন না। তার ফুটপাতের খাবারের দোকানটি প্রশাসন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই তিনি আর বিক্রি করতে পারছেন না। অথচ তার সামান্য এই দোকানের ক্ষুদ্র আয়ে চলে তার পরিবারে বৃদ্ধা মাসহ তার ৪-৫ জনের সংসার।

এদিকে আর এক অসহায় মালেকা খাতুন নামের এক নারী বলেন, “আমি খাবারের হোটেলসহ ডেকোরেটরে কাজ কাম করে খাই কিন্তু এখন কাজকাম সব বন্ধ কি করে যে চলব ভেবে পাচ্ছি না। আমার ছেলেটাও বেকার হয়ে গেছে সে কিছু ঋণদিনা আছে, সামনে দিন কিভাবে কাটবে ভেবে সারারাত ঘুমাতে পারছি না।”

চায়ের দোকানদার হাবিব শেখ অনেকটা কান্নাস্বরে মনের কষ্টগুলো ব্যাখ্যা করে বলেন, চায়ের দোকানের উপর আমার পরিবারের ভরণ-পোষণ চলে, দোকান বন্ধ, কিভাবে বাঁচবো? না খেয়ে মরে যেতে হবে।

ফরিদপুরের সিএন্ডবি ঘাটে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার দূর-দুরান্ত থেকে আসা কয়েকজন ঘাট শ্রমিকরা বলেন, “আমরা জেলার বিভিন্ন ঘাটে কাজ করি, ব্যাচেলার হিসেবে ঘরভাড়া করে থাকি। যদি কাজ করতে না পারি তাহলে আমরা খাবো কি? ঘরভাড়া দিবো কিভাবে? তাছাড়া গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে মেয়েরা আমাদের মুখপানে চেয়ে থাকে কখন বিকাশে টাকা পাঠাবে।”

এদিকে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলে ও অনুসন্ধান করে জানা যায়,  মহামারি করোনাকালে এমনিতে মানুষের আয় কমে গেছে, কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় ও চলাচলে বিধি নিষেধ আরোপ করায় চরম সংকটে হাবুডুবু খেতে হচ্ছে দিনমুজুর, রিকশা-ভ্যান চালক, দোকান ও ঝাল মুড়ি বিক্রেতার মত অসংখ্য মানুষকে।

সুশীল সমাজের কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রান্তিক পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি রাজনীতিবিদ, মসজিদের ইমাম, স্কুল শিক্ষক, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, পাড়া মহল্লার ক্লাব ও ছাত্রদের সমন্বয়ে খাদ্য ও অর্থপ্রাপ্তির নিশ্চয়তার কথা প্রচার করে এবং সুষ্ঠুভাবে সহায়তা দানের ব্যবস্থা করা হলে লকডাউনে মানুষের ঘরে থাকা পুরোপুরি নিশ্চিত করা যেতে পারে। এজন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ একান্ত জরুরি।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন বলছে, লকডাউনে অসহায় ও দিনমজুরদের জন্য সরকারের দেওয়া ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ৩৩৩ নম্বরে কল করলেও তাৎক্ষণিক খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। 

Link copied!