মশিয়ার রহমান (৪৮)। যশোরের বেনাপোলের কাগজপুকুর গ্রামে বাস করেন। সংসারে বাবা-মা, স্ত্রী ছেলে-মেয়েসহ সবাই আছেন। বাবা রুস্তম সরদারের অনেক বয়স হয়েছে, কোনো কাজ করতে পারেন না। মায়েরও একই অবস্থা। ছেলেমেয়ে ছোট। এ অবস্থায় পরিবারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জন করা ব্যক্তি। কিন্তু জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৯ বছর আগে হারিয়েছেন চলার দুটি পা। তবু তিনি থেমে যাননি। সংসার চালাতে কারও কাছে হাত না পেতে পা-বিহীনভাবে ভ্যান চালিয়ে শুরু করেন জীবিকা নির্বাহ।
জীবনযুদ্ধে হার না মানা মশিয়ার রহমান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “পরিবারের সব খরচ তার ভ্যানের আয় দিয়েই চলে। প্রতিদিন যা আয়-রোজগার হয়, তা দিয়েই চলতে হয়। দিনে ৫০০-৭০০ বা একটু কমবেশি টাকা উপার্জন হয়। এভাবেই চলে দিন। পা না থাকাতে চলাফেরা করতে বা ভ্যান চালাতে কষ্ট হলেও পরিবারের কথা মনে পড়লে কষ্টটা কিছুই মনে হয় না।”
তিনি আরও বলেন, “জীবনে সংগ্রাম করে চলছি। কখনো কোনো কাজকে ছোট করে দেখিনি। অনেক সময় পায়ের দিকে তাকিয়ে আমার ভ্যানে যাত্রী উঠতে চায় না। আবার অনেকে আমার এই জীবনটাকে সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকে।”
ওই এলাকার বাসিন্দা ইজিবাইকচালক জাহিদ হাসান বলেন, “মশিয়ার রহমানকে যতটুকু দেখেছি তিনি অনেক সাহসী ও পরিশ্রমী। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে প্রতিনিয়ত বেঁচে আছেন। জীবনযুদ্ধে হার না মানা হাজার মানুষের মধ্যে তিনিও একজন সংগ্রামী ব্যক্তি।”
২০১৩ সালে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দুটি পা কেটে বাদ দিতে হয়। পা হারিয়েও হার মানতে রাজি হয়নি তিনি। সংসারে বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়েসহ পারিবারিক খরচ চালাতে ভ্যান চালিয়ে শুরু করে জীবিকা নির্বাহ। এর পর থেকেই চলছে মশিয়ার রহমানের সংগ্রামের জীবন।