বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী ছিল রোববার (৮ মে)। করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত নওগাঁর পতিসর কাছারিবাড়ি প্রাঙ্গণে নামে রবীন্দ্রভক্তদের ঢল।
কবিতা, গান, নাটক ও আলোচনা সভার আয়োজন ছাড়াও কবিগুরুর স্মৃতিধন্য পতিসরে সকাল থেকে গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষের সমাগম ঘটে। ২৫শে বৈশাখ সকাল ১০টায় পতিসর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে কবিগুরুর ১৬১তম জন্মোৎসবের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে কাছারিবাড়ি চত্বরে রাজশাহী চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও নওগাঁ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘রং তুলিতে রবীন্দ্রনাথ’ চিত্র প্রদর্শনী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার ও আনোয়ার হোসেন, নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া।
দেবেন্দ্র মঞ্চে ‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক স্মারক আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আশরাফুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি ড. পি এম শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের পরিচালক আলী রেজা আব্দুল মজিদ ও নওগাঁ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম।
এ সময় প্রধান অতিথি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের একজন দিকপাল। বাঙালি জীবনে নানা অনুষঙ্গে রবীন্দ্রনাথ এখনো প্রাসঙ্গিক। বাঙালি জীবনের যত বৈচিত্র্য রয়েছে তার পুরোটায় উঠে এসেছে কবিগুরুর কবিতা, গান, গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাসে।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “মানবতার সংকট থেকে উত্তরণে কবিগুরু তার লিখনিতে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। রবীন্দ্র সাহিত্য চর্চা করলে মানবজীবনের নানা সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।”
কবির এই জন্মবার্ষিকীতে পতিসরে নামে রবীন্দ্রভক্তের ঢল। পরিণত হয় মানুষের মহামিলন মেলায়। সরকারিভাবে এক দিনের কর্মসূচি নিলেও এ মিলনমেলা চলবে প্রায় পুরো সপ্তাহ।