নওগাঁয় জনপ্রিয় হচ্ছে মেটে আলুর চাষ। জেলায় এ সবজিটি গাছ আলু নামেও পরিচিত। মাটির নিচের পাশাপাশি এই গাছের লতায়ও আলু উৎপন্ন হয়।
চলতি মৌসুমে মান্দা উপজেলায় ৬ একর জমিতে মেটে আলুর চাষ হয়েছে। এ উপজেলায় আবহাওয়া মেটে আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও ভালো হচ্ছে। ফলন ভাল হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
জেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার নিচু এলাকা ছাড়া প্রায় সব এলাকায় কম বেশি মেটে আলুর চাষ হয়েছে। যার পরিমাণ একশ হেক্টর জমি। কৃষকরা মূলত দেশীয় নানা জাতের মেটে আলুর চাষ করেন।
উপজেলার শামুকখোল, গাইহালা ও কুসুম্বাসহ গ্রামের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা ব্যাপকভাবে মেটে আলুর চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমিতেই মাচায় চাষ করা হয়েছে। এর জন্য নতুন করে কোনো মাচা তৈরি করতে হয়নি কৃষকের। মেটে আলু রোপণের আগে ওই জমিতে ঝিঙে কিংবা উচ্ছে চাষ করেছেন কৃষক। এ সব ফসল উঠে যাওয়ার পর মেটে আলু চাষ হচ্ছে।
বর্তমানে প্রতিটি মাচায় মেটে আলুর সবুজ পাতা আর আঁকাবাকা লতা এক অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এটি গড় আলু, গুইচ্যা আলু, লেমা আলু, ধুসড়ী আলু, আলতাপাট, চুবড়ি আলু, হরিণখালি, মাছরাঙ্গা, হাতিপায়া, মৌ প্রভৃতি নামে পরিচিতি লাভ করলেও মূলত এর ৪ থেকে ৫টির মতো জাত আছে বলে জানা গেছে।
কৃষকরা বলেন, বৈশাখ কিংবা জ্যৈষ্ঠ মাসে জমিতে মেটে আলুর বীজ রোপণ করতে হয়। ওই সময়ে জমিতে উচ্ছে কিংবা ঝিঙের চাষ থাকে। এই ফসল মরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেটে আলুর লতা মাচায় (বানে) উঠিয়ে দিতে হয়। কোনো সার বা বিষ ছাড়াই শীতের শুরুতে আলু উঠতে শুরু করে। পোকা মাকড়ের উৎপাত কম, সে কারণে কীটনাশক ব্যবহার করা লাগে না। বিঘা প্রতি খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে বিঘা প্রতি ৬০-৭০ হাজার টাকার আলু বিক্রি করা সম্ভব।
নওগাঁর মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ডা. শায়লা শারমিন বলেন, “মেটে আলু চাষে ব্যয় ও পরিশ্রম দুটোই অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে কম। সে কারণে দিন দিন কৃষকের কাছে মেটে আলুর চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।”