• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
ফরিদপুর জেলা কারাগার

চিকিৎসক-সংকটে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে বন্দিরা


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২২, ০৮:৩১ এএম
চিকিৎসক-সংকটে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে বন্দিরা

ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র মূল সড়কের (মুজিব সড়ক) ঝিলটুলী এলাকায় ১৮২৫ সালে ৩৪ একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ফরিদপুর জেলা কারাগার। এই কারাগারের ৯ একর জায়গা বন্দিদের থাকার ব্যবস্থার স্থাপনা নির্মিত হয়েছে, অন্য ২৫ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে পুকুর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনের ইমারত।

তবে এ জেলা কারাগারের নেই কোনো চিকিৎসক, অসুস্থ বন্দিদের জন্য ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই, নেই কারাগারের ভেতরে বন্দি অসুস্থ রোগীদের ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ।

প্রাচীন এই কয়েদখানায় বিপুলসংখ্যক বন্দির জন্য টিনশেডে ঘরের একটি কক্ষে রোগীদের জন্য রাখা হয়েছে, যদিও তা ব্যবহারের অনুপযোগী।

জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, তিন মাসে বিভিন্ন রোগ নিয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছে ১ হাজার ৫০ বন্দি, বর্তমানে দুইজন বন্দি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে। এছাড়া গত এক মাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এক বন্দি।

ফরিদপুরের কারাগারের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবার দায়িত্বে থাকা ফার্মাসিস্ট আশরাফুল আলম জানান, কম করে হলেও কারাগারে বন্দীদের জন্য ২ থেকে ৩ জন চিকিৎসক দরকার। এছাড়া অসুস্থ বন্দিদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য পৃথক একটি হাসপাতালে দরকার। পাশাপাশি ৩ থেকে ৪ জন সেবিকা ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখার দরকার।

ফরিদপুর কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক আল-মামুন জানান, প্রাচীন এই বন্দিশালায় ধারণক্ষমতা রয়েছে বর্তমানে ৪২০ জন। বর্তমানে ৮৯৭ জন পুরুষ ১৭ নারী বন্দি অবস্থান করছেন। এখানে একটি পদ রয়েছে (সহকারী সার্জন) সেটি এক যুগের বেশি সময়ে শূন্য রয়েছে।

আল-মামুন বলেন, “বন্দিদের কেউ অসুস্থ হলে আমরা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি। এছাড়া জেলা সিভিল সার্জন অফিস একজন চিকিৎসককে প্রেষণে দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনি মাঝেমধ্যে আছেন। এর বাইরে আমাদের একজন সিনিয়র ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। এছাড়া যে জনবল রয়েছে তাতে বন্দি রোগী একজনকে বাইরের হাসপাতালে প্রেরণ করলে তার পেছনে তিনজনের ফোর্স দিতে হয়। এতে অন্য কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।”

জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক আরও জানান, শুধু ফরিদপুর কারাগারে বন্দি নয়, পার্শ্ববর্তী অন্য জেলার কারাগার থেকে অসুস্থ বন্দি আসেন এখানে। তাদের কারাবিধি নিয়মানুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য কারারক্ষীদের প্রহরায় সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ফরিদপুর কারাগারের বেসরকারি কারা পরিদর্শক কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, “ফরিদপুরের কারাগারের ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বন্দি রয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই বন্দিদের নানা বিধ সমস্যা হয় এটা সত্য। তবে আমার পরামর্শ হলো কারাগারের বন্দিদের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চিকিৎসাসেবাসমূহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিতে হবে।”

ফরিদপুর কারাগারের বন্দিদের চিকিৎসাসেবা সম্পর্কে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে একজন চিকিৎসকে কারাগারের সংযুক্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত কারাগার পরিদর্শন করা হয়, বন্দিদের সুবিধা-অসুবিধা খোঁজ নেওয়া হয়। বড় কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

Link copied!