প্রায় ৪৭ বছর বা ৪ যুগ পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মোখলেসুর রহমান জয় পেয়েছেন। এর আগে সর্বশেষ ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সিরাজুল ইসলাম সনি মিয়া তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর বিগত ৪৭ বছরেও এই পৌরসভায় দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের কোনো চেয়ারম্যান অথবা মেয়র প্রার্থী জয়লাভ করেননি।
সীমানা জটিলতায় স্থগিত হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ৩০ নভেম্বর (মঙ্গলবার)। এই প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোখলেসুর রহমান বেসরকারিভাবে মেয়র হিসেবে জয়লাভ করেছেন।
নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৬১৩ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভোট বর্জন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মো. সামিউল হক লিটন মোবাইলফোন প্রতীকে পেয়েছেন ২১ হাজার ৬১৪ ভোট।
নির্বাচন পরবর্তী ফলাফল ঘোষণাকালে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মোতাওয়াক্কিল রহমান জানান, অপর দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত নারিকেল গাছ প্রতীকের নজরুল ইসলাম পেয়েছেন ১২ হাজার ৪৫৫ ভোট। এছাড়া সাবেক শিবির নেতা জগ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান ২ হাজার ১৮০ ভোট পেয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছেন। নির্বাচনে মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ৮৪ হাজার ৮৬২ এবং বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৪৪২।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন চারজন প্রার্থী। এছাড়াও ১৫টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৯৮ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ২১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় এবার ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১ হাজার ৪৩২ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ৭৪ হাজার ৬৫ জন।
এদের মধ্যে বিকেল ৩টায় বিভিন্ন অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন। একই কারণে বেলা সাড়ে ১১টায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. হারুনুর রশিদের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট স্থগিতের জোড় দাবি জানান বিএনপির নারকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম।
সীমানা জটিলতায় স্থগিত হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ভোট গ্রহণ হয় মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর)। সকাল ৮টা ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ১৫টি ওয়ার্ডের ৭২টি ভোটকেন্দ্রে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকেই নারী ও পুরুষ ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
গত ২ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৬ অক্টোবর সীমানা জটিলতায় হাইকোর্টে একটি রিটের প্রেক্ষিতে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন।