• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কোটার সুবিধা পেতে স্ত্রীকে বানালেন বোন


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ০২:৪৮ পিএম
কোটার সুবিধা পেতে স্ত্রীকে বানালেন বোন

মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা পেতে নিজের স্ত্রীকে বোন হিসেবে দেখানোর অভিযোগ উঠেছে আনিসুর রহমান নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায়।  

জানা যায়, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটিনাওডাঙ্গা আমিরটারী তালবেরহাট গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক ও জমিলা বেগম দম্পতির বাড়ি। তাদের ৮ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে আনিছুর রহমান। তিনি রংপুর বেতারে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করেন। ২০০৭ সালে জেলার উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের নাগড়াকুরা গ্রামের বাজারের পাশে বাসিন্দা মৃত রবিউল ইসলামের মেয়ে সোনালী খাতুনকে বিয়ে করেন।

বিয়ের পর সোনালী খাতুন তথ্য গোপন করে শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের পিতা-মাতা দেখিয়ে ২০১৪ সালে ভোটার হন। এর আগে উপজেলার সাপখাওয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২০১০-১১ সেশনে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হন। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা দম্পতিকে পিতা-মাতা দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন। এই মাদ্রাসা থেকে সোনালী খাতুন ২০১৩ সালে জিপিএ-২.৯৪ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন।

এই বিষয়ে প্রতিবেশী হজরত বেলাল বলেন, “এনআইডিতে থাকা ছবি সোনালী খাতুন আনিছুর রহমানের স্ত্রী। তাদের ঘরে ৩টি সন্তান রয়েছে।”

প্রতিবেশী রাশেদ বলেন, “নিজের বৌকে কেন বোন বানিয়েছে তা আমরা জানি না। এই বিষয়টি আগে জানতাম না। আজই প্রথম দেখলাম। অসৎ উদ্যোশ্য ছাড়া এমনটি কেউ করতে পারে না।”

১ নম্বর ওয়ার্ডে গ্রাম পুলিশ জহুরুল হক বলেন, “আনিছুর রহমান আমার বাল্যবন্ধু। সোনালী খাতুন আনিছুরের স্ত্রী। সে উলিপুর উপজেলায় বিয়ে করেছে। সোনালীর বাবার বাড়ি সেখানেই। ভোটার আইডিতে সোনালী খাতুনের পিতা-মাতার জায়গায় আনিছুরের পিতা-মাতার নাম ব্যবহার করেছে আমি জানি।”

আনিছুর রহমানের ছোট ভাই খালেক ভোটার আইডি দেখে নিশ্চিত করেন সোনালী খাতুন তার ভাবী। তিনি স্বীকার করেন, যখন ভোটার হয়েছিল তখন মুক্তিযোদ্ধার সুযোগ সুবিধা পেতে তার ভাই এমনটি করেছেন।

আনিছুর রহমান জানান, ভুল করে তার স্ত্রী এমনটি করেছেন। ভোটার আইডি এবং শিক্ষা সনদ ঠিক করে নেবেন।

তবে এই বিষয়ে তার স্ত্রী সোনালী খাতুনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি অস্বীকৃতি জানান।

সন্তোষপুর ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হকের ৮ ছেলে-মেয়ের মধ্যে সোনালী খাতুন নামে কোনো সন্তান নেই। এই নামে তার পুত্রবধূ রয়েছে। সে আনিছুর রহমানের স্ত্রী।”

উপজেলা নির্বাচন অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, “সোনালী খাতুন ২০১৪ সালে ভোটার হালনাগাদের সময় এসএসসি সনদ এবং জন্ম নিবন্ধন তথ্য দিয়ে ভোটার হয়েছেন। তথ্য গোপন করার বিষয়ে কেউ লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করেননি। এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে ভোটার তালিকা আইন ও বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!