• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কালবৈশাখীতে দুজন নিহত, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২২, ০২:১০ পিএম
কালবৈশাখীতে দুজন নিহত, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

দেশের বিভিন্ন স্থানে বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল এবং মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে কালবৈশাখী হানা দিয়েছে। ঝড়ে দুই বৃদ্ধ মারা গেছেন। এদিকে ভুট্টা, গম ও ধানসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুমিল্লা

মুরাদনগরে বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে কালবৈশাখীর কবলে পড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা যাত্রী শিশু মিয়া (৬৫) নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও চারজন আহত হয়েছেন। শিশু বাঙ্গরা থানা এলাকার ঘোষঘর গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাঙ্গরাবাজার থানা পুলিশের উপপরিদর্শক রনি চৌধুরী বলেন, সকালে কালবৈশাখী শুরু হয়। ঝড়ে একটি গাছ চলন্ত অটোরিকশার ওপর পড়ে। এ সময় চালকসহ পাঁচজন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে বৃদ্ধ শিশু মিয়া মারা যায়।

লক্ষ্মীপুর

রায়পুরে কালবৈশাখী তাণ্ডবে নারকেলগাছ পড়ে রুহুল আমিন (৬৩) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। সকাল ৮টার দিকে উপজেলার মধ্য কেরোয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রুহুল আমিন ওই গ্রামের হানিফ মাঝি বাড়ির বাসিন্দা ও পেশায় ভিক্ষুক ছিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসমত জেরিন জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বুকে অতিরিক্ত চাপে তিনি মারা গেছেন।

রংপুর

বদরগঞ্জ উপজেলা সদরের আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাত ১২টার কালবৈশাখী আঘাত হানে। ঝড় আর শিলা বৃষ্টিতে আম, ভুট্টা, গম ও ধানসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি।

নওগাঁ

সদর উপজেলা ও রানীনগর উপজেলায় বুধবার ভোর ৪টার দিকে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ইরি-বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। মাঠের প্রায় ৯০ শতাংশ ধান মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামছুল ওয়াদুদ বলেন, মাঠের প্রায় সব ধান জমিতে শুয়ে পড়েছে। তবে পাকা এবং আধা পাকা হওয়ায় ধানের খুব একটা ক্ষতি হবে না। বৃষ্টির কারণে আমের অনেক উপকার হবে বলে মনে করি।

এদিকে আত্রাই উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ও বৃষ্টিতে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠের বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস তথ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কমপক্ষে ৭ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমির ধান নুয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার ভোঁপাড়া, সাহাগোলা, মনিয়ারী, বিশা, পাঁচুপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের ওপর দিয়ে কলবৈশাখী ও বৃষ্টি হয়। এতে কয়েক সহস্রাধিক জমির পাকা ও আধা পাকা ধান ঝড়ো হাওয়ার কারণে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ধান কাটার সময় বোঝা যাবে এই ঝড়ের কারণে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে। চলতি বছরে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮১ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন। তবে এই ঝড়ের কারণে আটাশ ও জিড়া ধানের বেশি ক্ষতি হ‌ওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভোলা

উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী ও বৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ করেই দমকা হাওয়া বইতে শুরু করে। ক্রমে বেড়ে চলে হাওয়ার গতি। একপর্যায়ে তা কালবৈশাখীর রূপ নেয়। আবার কোথাও কোথাও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়।

এতে করে কিছু কিছু স্থানে গাছপালা ভেঙে বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এ সময় ভোলার ইলিশা এলাকার মেঘনা নদী উত্তাল হয়ে উঠে। নদীতে থাকা লঞ্চের যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে তীব্রতাপদাহের পর বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি নেমে আসে।

ভোলার আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মাহাবুবুর রহমান জানায়, এটি ছিল বছরের প্রথম কালবৈশাখী। এসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার। পাশাপাশি বৃষ্টি হয় ১ দশমিক ৭ মিলিমিটার। তবে দিনে আবহাওয়া মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকলেও রাতে তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
 

 

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!