‘অপ্রাসঙ্গিক কথায় সময় ক্ষেপণ করছেন প্রদীপের আইনজীবীরা’


কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১, ১০:০৫ পিএম
‘অপ্রাসঙ্গিক কথায় সময় ক্ষেপণ করছেন প্রদীপের আইনজীবীরা’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেছেন, “অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে সময় ক্ষেপণ করছেন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি ও টেকনাফ থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের আইনজীবীরা “

পিপি ফরিদুল আলম বলেন, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বরখাস্ত ওসি প্রদীপকে ডিভিশন দেওয়ার আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে কারাবিধি অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আদেশ দেন।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) এ হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দফা সাক্ষ‍্য গ্রহণের সময় প্রদীপের আইনজীবী রানা দাশগুপ্তের ডিভিশন চেয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে সকাল ১০টা থেকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সিনহা হত্যা মামলায় ৫নং সাক্ষীর সাক্ষ‍্য গ্রহণ শুরু হয়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচ  জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার  ৫নং সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মামলার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ সব আসামিকে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় আদালতে আনা হয়। গত রোববার আদালতে ৩নং সাক্ষী মোহাম্মদ আলীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। এ ছাড়াও গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট টানা তিন দিন মামলার ১নং সাক্ষী ও বাদী শারমিন সাহরিয়া ফেরদৌস এবং ২নং সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করেন আদালত।

এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম আরও বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অপ্রাসঙ্গিক কথা বলার কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট সাক্ষীদের জবানবন্দি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সাক্ষীদের যে প্রসঙ্গে জেরা করার কথা, তা না করে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলার কারণে এ সাক্ষ্যগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে যদি আসামিপক্ষ ন্যায়বিচারের স্বার্থে সময় ক্ষেপণ না করে, তাহলে মামলার জন্য ভালো হয়।

গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এদিকে, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এরপর মেজর সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন র‌্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।


 

Link copied!