নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে ১৬ মাস বয়সের একটি শিশুকে অপহরণের ৭ ঘণ্টা পর ঢাকার মহাখালী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার রাত দেড়টার দিকে মহাখালী উড়ালসেতুর নিচ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণে জড়িত অভিযোগে ওই স্থান থেকেই এক কিশোরীকে (১৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
অপহরণের শিকার শিশুটির নাম জাফনাথ সাঈদা। সে সোনারগাঁ উপজেলার জহিরুল ইসলাম ও উম্মে সালমা দম্পতির সন্তান। জহিরুল নারায়ণগঞ্জ আদালতের আইনজীবী ও তাঁর স্ত্রী নারায়ণগঞ্জের সরকারি তুলারাম কলেজের প্রভাষক। এদিকে গ্রেপ্তার কিশোরী এই দম্পতির বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, জহিরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে মোগরাপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। রোববার বিকেলে জহিরুল ও তাঁর স্ত্রী ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ওই বাড়ির গৃহকর্মী শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান না পেয়ে ওই দিন বিকেলেই সোনারগাঁ থানায় গৃহকর্মীকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন জহিরুল ইসলাম।
মামলার পর নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিল্লাল হোসেন ও সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে থানা-পুলিশের একাধিক দল কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।
ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার তেজগাঁওয়ের সাততলা বস্তিতে অভিযান চালানো হয়। বস্তির কয়েকজন বাসিন্দার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মহাখালী উড়ালসেতুর নিচ থেকে অপহৃত শিশু জাফনাথ সাঈদাসহ অভিযুক্ত কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এরপর অপহরণের মামলায় কিশোরীকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
হাফিজুর রহমান আরও বলেন, অভিযুক্ত কিশোরী একসময় তেজগাঁও সাততলা বস্তিতে বসবাস করত। বস্তিতে থাকার সময় সে মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২৫ দিন আগে সে জহিরুল-সালমা দম্পতির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। মূলত মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করেছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে ওই কিশোরী।
এদিকে অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ওবায়দুর রহমান জানান, ওই কিশোরীকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে রাতেই তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মামলার বাদী জহিরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বাসায় কাজ নেওয়ার আগে ওই কিশোরী বস্তিতে থাকত এবং সে যে মাদকাসক্ত ছিল, তা আমাদের জানা ছিল না। তথ্য গোপন করে সে আমার বাসায় কাজ নেয়। পুলিশের তাৎক্ষণিক তৎপরতার কারণে আমাদের সন্তানকে আমরা ফিরে পেয়েছি।”