• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

পূজামণ্ডপে ‘ইসলামি গান’ গাইলেন যুবকেরা, ক্ষুব্ধ হিন্দুধর্মাবলম্বীরা


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৪, ০১:০২ পিএম
পূজামণ্ডপে ‘ইসলামি গান’ গাইলেন যুবকেরা, ক্ষুব্ধ হিন্দুধর্মাবলম্বীরা
ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের জে এম সেন হলের পূজামঞ্চে ইসলামি গান পরিবেশন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, একদল যুবক ইসলামি গান গাইছেন। এতে ক্ষুব্ধ হন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এ ঘটনায় মামলার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। 

ঘটনাটি ঘটেছে নগরের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে। চট্টগ্রাম মহানগনর পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মণ্ডপ এই জে এম সেন পূজামণ্ডপ। সেখানেই এমন ঘটনায় উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এই গানের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রাতে প্রশাসন দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ‍‍`শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম/ বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ গান গাইছে ছয় তরুণ। এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ফেসবুকে এ নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা। কিছুক্ষণ পর এ সম্পর্কিত আরেকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ওই গানটি নেই। এ নিয়ে আলোচনা ও তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এক পক্ষ প্রথম ভিডিওকে এডিটেড বা সম্পাদিত বলে আখ্যা দেয়। অন্যপক্ষ দ্বিতীয়টিকে অসম্পূর্ণ বলে মন্তব্য করে।

এদিকে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও যাচাই করে স্বাধীন ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, পূজামণ্ডপে গানের ভিডিওটি আসল, এডিটেড নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার উপস্থাপক ও পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্যদের মঞ্চে ডাকেন। মঞ্চে ওঠেন ৬-৭ জন তরুণ। তারা সেখানে দুটি গান পরিবেশন করেন। প্রথম পরিবেশন করেন, ‘গেরামের নওজোয়ান, হিন্দু মুসলান’ গানটি। এর পর তারা ‍‍`শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম/ বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ ইসলামি গানটি পরিবেশন করলে উপস্থিত সকলে হকচকিয়ে যান। এই গানের একটা লাইন ছিল-‘বিশ্ব মানুষের মুক্তির শেষ পথ বিপ্লব, ইসলামী বিপ্লব’। গানটির গীতিকার চৌধুরী আবদুল হালিম। পরে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও কয়েকজন বিএনপি নেতার হস্তক্ষেপে তাঁরা মঞ্চ ত্যাগ করেন। সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে এবং এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে রাতেই চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা পূজা মণ্ডপে ছুটে যান। তারা পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি শেয়ার করে অনেকে দাবি করেন, মঞ্চে গানটি পরিবেশনকারীরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাংস্কৃতিক সংগঠন পাঞ্জেরীর সদস্য। তবে দলটি এমন দাবি নাকচ করেছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন দক্ষিণ পুলিশের উপকমিশনার লিয়াকত আলী জানান, পূজা উদযাপন পরিষদের অনুমতি নিয়ে তারা সেখানে সংগীত পরিবেশন করেছে। তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই হলেও চট্টগ্রামে কোনো সমস্যা নেই।

Link copied!