বিয়ের দাবিতে সারা রাত প্রেমিকের বাড়ির সামনে অনশন করেছেন এক তরুণী। অবশেষে পরদিন ভোরে প্রেমিকের পরিবার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে নতুন বউকে ঘরে তোলেন। রোববার (৭ জুলাই) রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ওই তরুণ একটি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়েন। কলেজ থেকে ওই তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একসঙ্গে তারা বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেছেন। রেস্তোরাঁয় খেয়েছেন, দিয়েছেন আড্ডা। তরুণ তার প্রেমিকাকে বিয়ের আশ্বাসও দিয়েছেন। প্রায় দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক তাদের। এরই মধ্যে হঠাৎ তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তরুণ। এতে তরুণী দিশাহারা হয়ে পড়েন। বিয়ের দাবিতে তরুণী তার প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।
তরুণীকে বাড়িতে আসতে দেখে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন তরুণের স্বজনেরা। কিন্তু বিয়ের দাবিতে অনড় তরুণী ফটকের সামনেই অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে অনশনের ১৫ ঘণ্টা পর রোববার ভোরে তরুণীকে তার পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন তরুণ। পরে তরুণীর ঠাঁই হয় তরুণের বাড়িতে।
এ বিষয়ে তরুণী জানান, কিছুদিন ধরে তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছিলেন তরুণ। সপ্তাহখানেক তার সঙ্গে যোগাযোগ একেবারে বন্ধ করে দেন। বাধ্য হয়ে শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে তিনি প্রেমিকের বাড়িতে যান। কিন্তু প্রেমিকের পরিবারের সদস্যরা বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন। এ কারণে তিনি বাড়ির ভেতরে ঢুকতে না পেরে দরজার সামনে অবস্থান নিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। আশপাশের লোকজনও তার পক্ষে ছিলেন।
প্রতিবেশীরা বলেন, দিন গড়িয়ে রাত হলেও মেয়েটি বাড়ির দরজার সামনেই বসে ছিলেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে বাধ্য হয়ে শনিবার রাত তিনটার দিকে ছেলেসহ পরিবারের লোকজন মেয়ের দাবি মেনে নেন। পরে রোববার ভোর পাঁচটার দিকে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।
নববধূ বলেন, “ছেলেটিকে বিয়ে করা ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না। আমি ওকে ভালোবাসি। আমার জন্য দোয়া করবেন।”
প্রতিবেশী ইয়াছিন আলী বলেন, মেয়েটি তার দাবি আদায় করেই ছেড়েছেন। তাদের বিয়ে হওয়ায় প্রতিবেশীরাও খুশি।
ঘটনাটি শুনেছেন বলে জানান বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হাসান কবীর। তিনি বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই বিয়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়েছে।