ঘোড়ায় চড়ে স্বপ্নের রাজপুত্র এসে নিয়ে যাবে রাজকন্যাকে- গল্পকথায় এমন উপমা হরহামেশাই দেখা মেলে। তবে যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একালের রাজকন্যাদের বিয়ের গল্পেরও আধুনিকায়ন হয়েছে। এখন রাজকন্যাদের স্বপ্নের রাজপুত্র আর ঘোড়ায় চড়ে নয়, আসেন হেলিকপ্টারে চড়ে। একালের এমনই এক রাজপুত্রের দেখা মিলল ফেনী জেলার সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতলি গ্রামে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তুলাতলি গ্রামের ফসলের মাঠে এসে নামল একটি হেলিকপ্টার। চারপাশে ততক্ষণে শতশত মানুষের ভিড় জমে উঠেছে। কিছুক্ষণ পর আকাশযান থেকে নেমে এলেন বর স্পেন প্রবাসী ইসরাফুল আলম। লালগালিচা অতিক্রম করে পাশেই অপেক্ষা করা ফুল দিয়ে সাজানো বিয়ের গাড়িতে ওঠেন বর। তাতে চড়েই রাজকন্যাকে আনতে পৌর শহরের জারা কমিউনিটি সেন্টারে গেলেন স্বপ্নের রাজপুত্র।
বর-কনের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হেলিকপ্টারে চড়ে আসা বর উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের স্পেন প্রবাসী মো. আলমগীর হোসেন ও রোকেয়া বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে মো. ইসরাফুল আলম রিফাত। আর কনে সোনাগাজী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তুলাতলি গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মাঈন উদ্দিন মানিক ও নুর নাহার বেগম দম্পতির মেয়ে খাদিজাতুল কোবরা নিঝুম। বিয়ের এই মুহূর্তটি স্বরণীয় করে রাখতে এবং গ্রামবাসীর মাঝে উৎসবের আমেজ ছড়াতে দুই লাখ দশ হাজার টাকা দিয়ে হেলিকেপ্টার ভাড়া করেছে বর পক্ষ।
মাঠে হেলিকপ্টারটি যতক্ষণ ছিল, ততক্ষণই চারপাশে ছিল উৎসুক জনতার উপচেপড়া ভিড়। নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন সোনাগাজী মডেল থানার একদল পুলিশ সদস্য। হেলিকপ্টারে করে আসা বরকে দেখার জন্য আশপাশের অনেকেই ভিড় জমান মাঠে। বিশ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে সম্পন্ন হয় বর-কনের। বর ও কনে পক্ষের দুই হাজার ১০০ জন অতিথির ভোজন শেষে বিকাল সাড়ে চারটায় কনেকে নিয়ে বর ফের চড়লেন হেলিকপ্টারে। কনের বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে ছিল বরের বাড়ি। সেখানে কনেকে বরণ করে নেন শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
বরের ভগ্নিপতি মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিয়ের দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে হিসেবে বিয়েতে হেলিকপ্টার ভাড়া করা হয়।
কনের বাবা মাঈন উদ্দিন মানিক বলেন, “বরের পক্ষ থেকে আমাকে বিষয়টি জানানো হলে আমিও গ্রামবাসীর মাঝে উৎসবের আমেজ ছড়াতে হেলিকপ্টার ভাড়ার ব্যাপারে সম্মত হই। নবদম্পতির জন্য আমি সবার কাছে দোয়া চাই।”